রবিবার- ২৪ আগস্ট, ২০২৫

সহজ ম্যাচ কঠিন করেই জিতল বাংলাদেশ

শামীম পাটোয়ারীর সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। সেই ক্যাচ মিস যেন বাংলাদেশের জয়েরই ইঙ্গিত! কিন্তু শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিক। সহজ ম্যাচটি হয়ে পড়ল পাহাড়সম কঠিন। সেই পাহাড় ভাঙল শরীফুলের হাঁকানো চারে। টাইগাররাও নাটকীয় ম্যাচটি জিতল ২ উইকেটে।

হৃদয়ের সেই ছয়ের পর পঞ্চম বলে শুয়ে পড়ে স্কুপ করে চার মেরেছেন শামীম। ফারুকির স্লোয়ার পড়েছেন দারুণভাবে। শেষ বলে হয়তো সিঙ্গেলই হতো, তবে হৃদয়-শামীমের দুর্দান্ত রানিংয়ে সেটিই হয়েছে দুই। জয়ের বন্দর তখন খুব নিকটে। কিন্তু এরপরই শামীমের উইকেটে আঘাত রশিদ খানের। দুর্দান্ত খেলতে থাকা শামীমকে ৩৩ রানে (২৫ বল) ফিরিয়েছেন এই লেগ-স্পিনার।

শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ৬ রান। এরই মধ্যে ওভারের কোটা পূরণ করে ফেলেছিলেন রশিদ-মুজিব ও ফারুকিরা। তাই তো শেষ ওভারে আক্রমণে আসেন করিম জানাত। প্রথম বলেই অফ-স্টাম্পের বাইরের বলকে চারে পরিণত করেন মেহেদী মিরাজ।

এরপরই নাটকীয়তা, মাত্র ২ রানের বাধা পেরোতেও তিনি যেন তাড়াহুড়োই করলেন। এরপর ওয়াইড বলে ব্যাটের কানা লাগিয়ে কট বিহাইন্ড তাসকিন আহমেদ। অপর পাশে অসহায় দৃষ্টি হৃদয়ের। এরপর? জানাতের শট বলকে পেছনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে থার্ডম্যানের হাতে ধরা নাসুম।পরপর তিন বলে তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশের পক্ষে ওভারের পঞ্চম বলে চার হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেছেন পেসার শরিফুল ইসলাম।

আরও পড়ুন :  এস আলমের ছায়াসঙ্গী জাহাঙ্গীরের অবাক প্রতারণা!

আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। বাংলাদেশে পরে ৮ উইকেট হারিয়ে ১ বল হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করেছে। এই জয়ে দুই ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।

শুক্রবার (১৪ জুলাই) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এর আগে আফগান বধের ভিত্তিটা রচনা করেছিলেন দুই তরুণ তৌহিদ হৃদয় ও শামীম হোসেন পাটোয়ারী। আফগানদের ১৫৪ রানের জবাব দিতে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।

দলীয় ৬৪ রানেই একে একে ফিরে যান রনি তালুকদার, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। ম্যাচে তখন আফগানিস্তান পরিস্কার ফেভারিট। সেখান থেকেই তৌহিদ হৃদয় ও শামীম পাটোয়ারীর ঘুরে দাঁড়ানো। আফগান স্পিন সামলে একটু একটু করে এগিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রান তোলেন দুজন।

আরও পড়ুন :  এস আলমের ছায়াসঙ্গী জাহাঙ্গীরের অবাক প্রতারণা!

১৮তম ওভারে শামীম রশিদ খানকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন ২৫ বলে ৩৩ রান করে। তার ইনিংসে চারের মার ছিল ৪টি। তারপরও ম্যাচে বাংলাদেশই ছিল পরিস্কার এগিয়ে। কিন্তু শেষ ওভারের নাটকে সহজ সমীকরণটা কঠিন ভাবে মিলিয়ে জিততে হলো বাংলাদেশকে।

তৌহিদ হৃদয় ৩২ বলে ৩টি চার ২টি ছয়ে ৪৭ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত। জাতীয় দলে আসার পর থেকেই দারুণসব দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে যাচ্ছেন তরুণ হৃদয়। এর আগে আফগানদের অল্পতে থামাতে না পারলেও শুরুতে দারুণ বোলিং করেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে নাসুম আহমেদের নিচু হওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে তৌহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন আফগান ওপেনার হযরতউল্লাহ জাজাই। আইপিএল খেলে আসা রহমতউল্লাহ গুরবাজ অপরপ্রান্তে বেশ সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন। গুরবাজকে অবশ্য বেশিদুর এগুতে দেননি তাসকিন আহমেদ।

তাসকিনের লেগের দিকে টেনে দেওয়া বলে বড় পুল শট খেলতে গিয়ে সীমানায় ধরা পরেছেন গুরবাজ। ফেরার আগে আফগান ওপেনার ১১ বলে করেন ১৬ রান। খানিক বাদে ইব্রাহিম জাদরানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। ৩২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় আফগানিস্তান।

আরও পড়ুন :  এস আলমের ছায়াসঙ্গী জাহাঙ্গীরের অবাক প্রতারণা!

করিম জানাতকে নিয়ে এরপর আফগানদের টানছিলেন মোহাম্মদ নবি। এই নবিই সবচেয়ে বড় ভূমিকাটা রেখেছেন আফগানদের চ্যালেঞ্জিং স্কোরে। করিম জানাত খুব বেশিদূর এগুতে পারেননি। ৯ বলে ৩ রান করে সাকিবের আর্ম বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন করিম। এরপর নাজিবুল্লাহ জাদরান ও আজমতউল্লাহ ওমরজায়ের সাথে দারুণ দুটি জুটি গড়ে তোলেন নবি।

নাজিবুল্লাহ কিছুটা ধরে খেলেছেন। তিনি ২৩ বলে ২৩ করে ফেরার পর আজমতউল্লাহ রীতিমতো ঝড় তুলেছিলেন। শেষ দিকে মাত্র ১৮ বলে ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৩৩ রান করেছেন আজমতউল্লাহ। মোহাম্মদ নবি শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪০ বলে ৫৪ রান করে। তার ইনিংসে চার ৬টি, ছক্কা ১টি।

বাংলাদেশের পক্ষে ২৭ রানে দুই উইকেট নেওয়া সাকিব আল হাসান সবচেয়ে সফল বোলার। একটি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোস্তাফিজুর রহমান।

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page