খেলাপি ঋণ আদায়ে এবার চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত দৈনিক সাঙ্গু পত্রিকার সম্পাদক কবির হোসেন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে ব্যানার হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন নির্বিচার লুটপাটে জর্জরিত এস আলম গ্রুপের ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা। ব্যাংকটি থেকে কবির হোসেনের ঋণ আসল ও মুনাফা মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ কোটি টাকায়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর কদম মোবারক এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির সামনে এ কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যাংকটির চকবাজার শাখার কর্মকর্তারা। কর্মকর্তাদের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের সহায়তায় চকবাজার ব্রাঞ্চ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা ঋণ নেন দৈনিক সাঙ্গুর সম্পাদক কবির হোসেন সিদ্দিকী। বর্তমানে তা মুনাফা-আসলে ১৭ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ঋণ প্রদানের সময় ব্রাঞ্চ থেকে বন্ধকী সম্পত্তির ভেল্যুয়েশন করার কোনো সুযোগ ছিল না। এমনকি ৫ লাখ টাকার ভালো কোনো গ্রাহককে ঋণ দেওয়ার সুযোগও ছিল না। ঋণখেলাপি হওয়ার পরে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানতে পারেন, ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যানের সহায়তায় বান্দরবানের গহীন অরণ্যের সামান্য জমি বন্ধক রেখে ওই ঋণ অনুমোদন নেন কবির হোসেন সিদ্দিকী। পরে ওই সম্পত্তির মূল্য ১০ লাখ টাকা বলে জানতে পারেন তারা।
ঋণ পরিশোধের জন্য ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে লিগ্যাল নোটিশ, শারীরিকভাবে গিয়ে এবং টেলিফোনে একাধিকবার তাগাদা দিলেও তিনি কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। উল্টো ব্যাংক কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যূত ও ট্রান্সফারের ভয় দেখাতেন কবির। ঋণখেলাপির বিষয়ে আদালতে মামলা না করার জন্য ব্রাঞ্চ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর অদৃশ্য চাপ প্রয়োগ করতেন তিনি। পরে ব্যাংকের পক্ষ থেকে চেক প্রতারণার অভিযোগে চারটি মামলা করা হয়। যার মধ্যে দুটিতে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এবং অপর দুটিতে সমন জারির জন্য বিচারাধীন আছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পরও তিনি দাপট দেখিয়ে গ্রেপ্তার এড়িয়ে চলছেন।
ব্যাংকের চকবাজার শাখার কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর বলেন, ‘যে ধরনের ঋণ কবির হোসেন সিদ্দিকী নিয়েছেন, তা স্বাভাবিকভাবে ৩ থেকে ৬ মাস লাগে অথবা কোনো প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি হলে সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ১ মাস সময় লাগে। কিন্তু উনি এক সপ্তাহের মধ্যে ম্যানেজম্যান্টকে কনভিন্স করে, ব্রাঞ্চে চাপ সৃষ্টি করে মোট সাড়ে ৭ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। কিন্তু কোনো টাকা ফেরত না দেওয়ার কারণে আমরা আজ বাধ্য হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। তার সঙ্গে আমাদের কারো কোনো ব্যক্তিগত পরিচয় নেই, শত্রুতাও নেই। আমরা শুধু ব্যাংকের স্বার্থ রক্ষায়, আমানতকারীদের বিশ্বাস ফেরাতে ঋণের টাকা ফেরত চাচ্ছি।’