মঙ্গলবার- ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪

পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমানোর ১২ উপায়

পিরিয়ডের সময় ব্যথা কমানোর ১২ উপায়
print news

পিরিয়ড বা মাসিকের দিনগুলোয় হরমোনের ওঠানামা হয় দ্রুত। তাই মুড সুইং বা মেজাজ পরিবর্তনের পরিস্থিতি দেখা যায়। এ সময় অনেকের পেট ও কোমরে ব্যথা হয়। সঙ্গে থাকে ক্লান্তি ও বমির প্রবণতা। এসব কারণে সেই সময়টা আরও কষ্টকর হয়ে ওঠে। তবে পিরিয়ডের ব্যথা বিভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয়। সবার শরীরের একই জায়গায় ব্যথা হয় না, আবার ব্যথার তীব্রতাও সবার একই রকম হয় না।

পিরিয়ডের সময় ব্যথা হয় কেন?
ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ও প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষক ড. কেটি ভিনসেন্ট পিরিয়ডের ব্যথা নিয়ে গবেষণা করে বলেন, ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ নারীর ঋতুস্রাব যন্ত্রণাদায়ক হয়। এর মধ্যে অনেকের যন্ত্রণা এত বেশি হয় যে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। জরায়ু গঠনকারী টিস্যু থেকে এ সময় এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয়, যার কারণে ব্যথা হয়। পিরিয়ডের সময় প্রোস্টাগ্ল্যানডিনস নামে এক ধরনের পদার্থ জরায়ুর পেশিকে সংকুচিত করে এবং প্রদাহ তৈরি করে। ফলে এই সময় ব্যথা হয়। পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে ঘরোয়া কিছু উপায় চলুন জেনে নিই।

আরও পড়ুন :  সেনাবাহিনীকে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত করার প্রত্যয় সেনাপ্রধানের

১. ভেষজ চা
কিছু ভেষজ চায়ে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা পিরিয়ড ক্র্যাম্প এবং পেটের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে। ভেষজ চা যেমন ক্যামোমাইল চায়ের প্রদাহবিরোধী গুণ রয়েছে এবং এটি পেশি শিথিল করতে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। পেপারমিন্ট চা ফুলে যাওয়া এবং পেট ব্যথাতেও সহায়তা করতে পারে। আরাম পেতে দিনে দুবার এই চা খেতে পারেন।

২. গরম পানির সেঁক
পিরিয়ডের ব্যথায় গরম পানির সেঁক খুব উপকারী। হট ব্যাগের মধ্যে গরম পানি নিয়ে পেটে সেঁক দিতে পারেন। আবার গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও ব্যথা কমে কিছুটা স্বস্তি মেলে।

৩. আদার রস খাওয়া যায়
পিরিয়ডের সময় পেটের ব্যথা কমাতে আদার রস বেশ উপকারী। এ সময় আদা চা পান করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। আদার সঙ্গে মধু, চিনি ও গরম পানি যোগ করে তিন-চারবার পান করলে ব্যথা কমে যায়।

৪. পেঁপে খেতে পারেন
পিরিয়ডের ব্যথা রোধের জন্য পেঁপে খাওয়া বেশ কার্যকর। পিরিয়ডের সময় নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খেলে পিরিয়ডের ব্যথা কমে যেতে পারে।

আরও পড়ুন :  আইনজীবী না থাকায় চিন্ময়ের জামিন শুনানি পিছিয়ে ২ জানুয়ারি

৫. জোয়ান
জোয়ানে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফাইবার রয়েছে, যা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এই সময় অনেকের হজম ক্ষমতা কম থাকে, তাই হজম ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য, কিছুটা জোয়ান গরম পানিতে সেদ্ধ করে নিন। তারপর পানি খেয়ে নিন উপশম পাবেন।

৬. ল্যাভেন্ডার তেল
পিরিয়ডের ব্যথার সময় পেটে কয়েক ফোঁটা ল্যাভেন্ডার তেল মালিশ করলে ব্যথা উপশম হয়। ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যে ব্যথা কমতে সাহায্য করে।

৭. অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে পিরিয়ডের ব্যথা কমতে শুরু করে। পাতা থেকে অ্যালোভেরা জেল বেরি করে নিতে হবে। তাতে মধু মিশিয়ে পান করতে হবে।

৮. নারিকেল তেল
নারকেল বা তিলের তেলের মালিশ- আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, নারকেল বা তিলের তেলে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ ও লিনোলিক অ্যাসিড থাকে। পিরিয়ডের সময় তলপেটে নারকেল বা তিলের তেলে ম্যাসাজ করলে মাংসপেশির মোচড় কমানো যায়। ফলে ব্যথা থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।

আরও পড়ুন :  শান্তিচুক্তির ২৭ বছরেও পাহাড়ে অশান্তি, চুক্তির মুলে নোবেল পুরুস্কারের লোভ

৯. পানি
পিরিয়ডের সময় প্রচুর পরিমাণ পানি খেতে হবে। কেননা এ সময় শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। তাই বেশি পরিমাণে পানি পান করা পিরিয়ডের ব্যথা কমিয়ে দেয়।

১০. হালকা ব্যায়াম
পিরিয়ডের ব্যথার কমাতে হালকা ব্যায়াম করতে পারেন। সহজ-সরল যোগব্যায়াম অথবা হাঁটাচলা করতে পারেন। তবে এ সময় ভারী কোনো কাজ করা উচিত নয়। ব্যায়াম করার ফলে পেশির মোচড় কমতে প্রাকৃতিক ওষুধের কাজ করে।

১১. শ্বাসের ব্যায়াম
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর জন্য শ্বাসের ব্যায়াম একটি দারুণ উপায়। এ ব্যায়াম করতে হলে আপনাকে বুকের ওপর একহাত ও পেটের ওপর আরেক হাত রেখে নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিতে হবে। এমনভাবে শ্বাস নেবেন যেন বাতাস বুকের গভীরে ঢুকে এবং পেট ফুলে যায়। এরপর এমনভাবে শ্বাস ছাড়ুন যেন আপনি একটি মোমবাতি নেভাচ্ছেন।

১২. খাবার
ভিটামিন ই, বি১, বি৬, সি-জাতীয় খাবার, যেমন- চীনাবাদাম, পোস্তবাদাম, আম, কলা, আপেল, মাছ, ডিম, গম, সবুজ সবজি এই খাবারগুলো মাংসপেশির সংকোচন কমিয়ে ব্যথা কমাবে।

ঈশান/মখ/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page