মমতাজের গানে মজেনি এমন মানুষ মেলা ভার। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে বলে কত গান শুনেছেন মমতাজের। দিয়েছেন দলীয় মনোনয়ন। কিন্তু ভোটারের মন গলেনি কালজয়ী এই কন্ঠশিল্পীর গানে।
একইভাবে জীবনধর্মী গান গেয়ে মানুষের মনে ঠাঁই নিলেও ভোটারের মন গলেনি নকুল কুমার বিশ্বাসের গানেও। এদিকে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাজহ ও ডলি সায়ন্তনীর নজরকাড়া রুপেও গলেনি ভোটারদের মন। ভোটাররা বুঝিয়ে দিয়েছেন দেশ কোন গানের মঞ্চ ও সিনেমা নয়। দেশ পরিচালনায় লাগে সঠিক নেতৃত্ব ও যোগ্যতা। ফলে ফল যা হওয়ার তাই হল।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডাব্বা মারল মমতাজ, মহিয়া মাহি ডলি সায়ন্তনী ও নকুল কুমার বিশ্বাস। যেন তেন নয়, একেবারে গো হারা হারল রুপবতি মাহিয়া মাহি ও কন্ঠশিল্পী নকুল কুমার বিশ্বাস। ভাগ্যিস, ভোট শেষ হওয়ার আগে বর্জন করেছেন ডলি সায়ন্তনী। তা নাহলে তিনিও যে কীভাবে হেরেছেন তা জাতির সামনে আসত।
দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংসদে যেতে বিভোর বিনোদন জগতের তারকারা। তবে শেষ পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাঠে ছিলেন ছয় তারকা। তারা হলেন নন্দিত অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ, অভিনেত্রী মাহিয়া মাহি, কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম, নকুল কুমার বিশ্বাস ও ডলি সায়ন্তনী।
আসাদুজ্জামান নূর, ফেরদৌস ও মমতাজ ছিলেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী। নীলফামারী-২ আসন থেকে নৌকার মাঝি ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর। তিনি এ আসনে টানা পাঁচবারের সংসদ সদস্য। বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী তিনি ১,১৯,৩৩৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জয়নাল আবেদিন পেয়েছেন ১৬৬৬২ ভোট।
এছাড়া ঢাকা-১০ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফেরদৌস আহমেদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তিনি পেয়েছেন ৬৫ হাজার ৮৯৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাজী মো. শাহজাহান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ২৫৭ ভোট।
একইভাবে মানিকগঞ্জ-২ আসনেও কন্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম নৌকার প্রার্থী। তিনি পেয়েছেন ৭৮ হাজার ২৬৯ ভোট। কিন্তু তাকে হারিয়ে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু। তিনি পেয়েছেন ৮৪ হাজার ৫২৫ ভোট।
অন্যদিকে মাহিয়া মাহি চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দল তাকে টিকিট না দেওয়ায় রাজশাহী-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন তিনি। মাহিয়া মাহি ৯ হাজার ৯টি ভোট পেয়ে হয়েছেন তৃতীয়।
এ আসনে ১১ হাজার ১৭৩ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯২ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম রাব্বানি পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯ ভোট।
এদিকে জীবনমুখী গানের গায়ক নকুল কুমার বিশ্বাস বরিশাল-২ আসনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। গামছা প্রতীকে নকুল কুমার পেয়েছেন ১৪২১ ভোট। ওই আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত বাংলাদেশ ওয়ারকার্স পার্টির (নৌকা প্রতীকে) রাশেদ খান মেনন পেয়েছেন ১২১৩৭৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ফাইয়াজুল হক রাজু ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৩১,১৬২ ভোট।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) প্রার্থী হিসেবে পাবনা-২ আসনে নোঙর প্রতীকে লড়ছিলেন গায়িকা ডলি সায়ন্তনী। ভোটের দিন দুপুরে ভোট বর্জন করেন ডলি সায়ন্তনী। তার আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আহমেদ ফিরোজ কবিরের জয় হয়েছে। এ আসনের ১০৩ টি কেন্দ্রের ঘোষিত ফলাফলে তিনি পেয়েছেন ১ লক্ষ ১৯ হাজার ১৬৭ ভোট।
ঈশান/খম/সুম