নানা আলোচনা সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরীকে বদলি করা হয়েছে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (রাঙ্গামাটি) সদস্য মোহাম্মদ মাহবুবউল করিম। সুজন চৌধুরীকে বদলি করা হয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে।
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা মেয়াদে সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত ছিলেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী। সখ্যতা ছিল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এমপি, মন্ত্রী এবং দাপুটে নেতাদের সঙ্গে।
মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেন রেলওয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমআর মঞ্জু চৌধুরী। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রাউজানের ছেলে সুজন চৌধুরী আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন। রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের লিজের জায়গাসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিলেন। যার উদাহরণ অনেক আছে। যা থেকে তিনিও নিয়েছে অনৈতিক সুবিধা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে যোগদানের পর তিনি আওয়ামী সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. হাসান মাহমুদ, চসিকের প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটনসহ অনেককে নিয়ম বহির্ভূতভাবে জমি ইজারা, টেন্ডারে অনিয়ম, চট্টগ্রামের ভেলুয়ার দিঘীর পাড়, আগ্রাবাদ ডেবা, শহীদ শাহজাহান মাঠসহ নানা রেলওয়ে স্থাপনা স্বার্থান্বেষী মহলের কাছে হস্তান্তরের অভিযোগসহ নানা অভিযোগ ওঠে সুজন চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
গত ১৭ অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। এ নিয়ে জোরালো আলোচনা-সমালোচনার জেরে বিতর্কিত এ কর্মকর্তাকে ঘিরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় রেল অঙ্গনে। এ ছাড়া সরকার পতনের আগের দিন (৪ আগস্ট) ছাত্র জনতার আন্দোলনের মধ্যে চট্টগ্রামের সিআরবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কৌশলে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে সুজন চৌধুরী বিরুদ্ধে।
ফলে সোমবার (২৮ অক্টোবর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী সাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ দেওয়া হয়। আদেশে চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের (রাঙ্গামাটি) সদস্য মোহাম্মদ মাহবুবউল করিমকে সুজন চৌধুরীর স্থলাভিষিক্ত করা হয় এবং সুজন চৌধুরীকে বদলি করা চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার পদে।
এ বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি সুজন চৌধুরী।