দুই মাসের চিনি আমদানিতেই ৩ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকার ভাাট ও শুল্ক ফাঁকি দিয়েছে এস আলম গ্রুপ। এর মধ্যে সাড়ে ৬০ হাজার টন চিনি বিক্রি বাবদ ২৪৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা শুল্ক পাওনা রয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট। এর আগে এস আলম গ্রুপের আরও দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পেয়েছেন কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট কর্মকর্তারা।
এসব টাকা চেয়ে গত ২২ আগস্ট এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রির কাছে চিঠি পাঠিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট থেকে। ওই চিঠির সন্তোষজনক জবাব বা চাহিদা অনুযায়ী শুল্ক দিতে ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রি ৬০ হাজার ৫০০ টন চিনি আমদানি করার পর শুল্ককর পরিশোধ না করেই সেগুলো বাজারে ছেড়ে মুনাফা তুলে নেয়। অথচ এসব পণ্য গুদাম থেকে বাজারে ছাড়ার আগেই নির্ধারিত শুল্ক পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এর আগে গত জুন মাসে এস আলম গ্রুপের দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পান ভ্যাট কর্মকর্তারা। ওই প্রতিষ্ঠান দুটি হলো চট্টগ্রামের এস আলম ভেজিটেবল অয়েল লিমিটেড এবং এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠান দুটি দুইভাবে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। একদিনে রিটার্নে কম বিক্রি দেখানো হয়েছে, অন্যদিকে আবার ভোজ্যতেল উৎপাদনের উপকরণ কেনায়ও ভ্যাট ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে পরবর্তী তিন বছর পণ্য বিক্রির তথ্য গোপন করে এস আলমের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান দুটি। এর মধ্যে এস আলম ভেজিটেবল অয়েলের ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ১ হাজার ৯১১ কোটি টাকা এবং এস আলম সুপার এডিবল অয়েলের ১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে।
এছাড়া গত ২০ আগস্ট এস আলম গ্রুপের ১৮টি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও লেনদেন তদন্তের জন্য চারটি অডিট টিম গঠন করে চট্টগ্রাম কাস্টমস এক্সাইজ এবং ভ্যাট কমিশনারেট। অডিট টিমগুলোকে এক মাসের মধ্যে এস আলমের কোম্পানিগুলোকে নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— এস আলম স্টিল লিমিটেড (ইউনিট-১), এস আলম স্টিল লি. (ইউনিট-২), এস আলম স্টিল লি. (ইউনিট-৩), চেমন ইস্পাত লিমিটেড, নিউ এস আলম শুজ অ্যান্ড বার্মিজ, এস আলম রিফাইন্ড সুগার, এসএস পাওয়ার লিমিটেড, অটোবোর্টস অটোমোবাইলস, প্লাটিনাম স্পিনিং মিলস লিমিটেড, এস আলম পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেড, এস আলম প্রপার্টিজ লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রি-রোলিং মিলস, সাইনিং এসসেন্ট লিমিটেড, গ্র্যান্ড স্পিনিং মিলস লিমিটেড, মাসুদ প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, ইনফিনিটি সি আর স্ট্রিপ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং মিলস লিমিটেড এবং ওশান রিসোর্ট লিমিটেড।