ঢাকায় এলো ইসরায়েলি বিমান- বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো কূটনীতিক সম্পর্ক না থাকলেও সেদেশের দুটি বিমান সরাসরি বাংলাদেশে অবতরণের বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ফলে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে বেবিচকের পক্ষ থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গত ৭ এপ্রিল একটি বিমান তেল আবিব থেকে উড্ডয়ন করে ৫টা ২২ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ করে ও কার্গো নিয়ে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে এবং অপরটি গত ১১ এপ্রিল বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে ঢাকায় অবতরণ ও রাত ১২টা ২৯ মিনিটে কার্গো নিয়ে ঢাকা থেকে উড্ডয়ন করে। দুটি বিমানই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধিত ও ওই দেশের বিমান সংস্থা ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের।
বাংলাদেশ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। বিমান চলাচল চুক্তি অনুযায়ী কার্গো ফ্লাইট দুটি ঢাকা এসেছিল। ঢাকা থেকে তৈরি পোশাক নিয়ে ফ্লাইট দুটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ এবং ইউরোপের একটি গন্তব্যে গিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ঢাকায় এলো ইসরায়েলি বিমান’ শিরোনামে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ভিন্নভাবে প্রকাশের ফলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তাছাড়া এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ পরিবেশনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত হিসাবে বিবেচ্য। এরূপ সংবাদ পরিবেশনা হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।
জানা যায়, ১১ এপ্রিল ইসরায়েলের তেল আবিব থেকে স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় রওনা হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশে অবতরণ করে ফ্লাইটটি। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের এনসিআর-৮০৬ নম্বর ফ্লাইটটি বোয়িং ৭৪৭-৪০০ মডেলের এয়ারক্রাফট দিয়ে পরিচালিত হচ্ছিল। এটি একটি কার্গো উড়োজাহাজ যা একসঙ্গে ১০৮ টন মালামাল নিতে সক্ষম।
বিমানবন্দর জানায়, ফ্লাইটটি অবৈধভাবে দেশে অবতরণ করেনি। সব ধরনের নিয়ম মেনেই একে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ফ্লাইটটিতে কোনো যাত্রী বা মালামাল ছিল না।
ইসরায়েল থেকে আসা সরাসরি ফ্লাইটের বিষয়ে জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, ইসরায়েল থেকে ফ্লাইট আসার তথ্যটি সঠিক। তবে ফ্লাইটটি ফাঁকা ছিল। বাংলাদেশে নামানোর মতো কিছু ছিল না।
তিনি বলেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট। এয়ারক্রাফটটিও যুক্তরাষ্ট্রের নিবন্ধন নেওয়া। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ার সার্ভিস অ্যাগ্রিমেন্ট (এএসএ) রয়েছে। তাদের ফ্লাইট অবতরণে কোনো বাধা নেই। মূলত ন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটটি বাংলাদেশ থেকে রেডিমেড গার্মেন্টস (আরএমজি) পণ্য নিয়েছে। এয়ারলাইন্সটি এই পণ্য মধ্যপ্রাচ্যের শারজাহ ও ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।
উল্লেখ্য, ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েলে ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা আছে। জাতিসংঘভুক্ত যে ২৮টি দেশ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়নি, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি।