দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে হাজির না হওয়ায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় চট্টগ্রাম-১০ আসনের এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে। সেই মামলায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন পেলেন তিনি।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আত্নসমর্পণ পূর্বক জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে জামিন আবেদন মঞ্জুর করে তাকে জামিনে মুক্তি দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট ৪র্থ আদালতের বিচারক সালাউদ্দিন। চট্টগ্রাম জেলা পিপি এড. ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলাটি হয়েছিল। পরে সমন জারি করেন আদালত। সমনটি জারি হয়ে আদালতে সমনটি ফেরত আসে। পরবর্তী ধাপ হিসাবে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। কিন্তু রোববার জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন আবেদন মঞ্জুর করে তাকে জামিনে মুক্তি দেন।
আদালত সূত্র জানায়, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনের আগে নিজ নির্বাচনী এলাকার মসজিদ, মন্দির ও প্যাগোডায় অনুদানের চেক বিতরণ করার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে গত ১৬ জানুয়ারি দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালত-৪ এ ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল এই মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, গত ২২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের আগে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সব মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনকে এক হাজার টাকা করে দেন নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু। একইভাবে মাদানি মসজিদে এক লাখ টাকার অনুদানের চেক দেন। বিষয়টি জুমার নামাজের খুতবার আগে মুসল্লিদের জানানো হয়। একইভাবে গত ২৪ ডিসেম্বর লালখান বাজারে প্রধান নির্বাচনি কার্যালয় থেকে চট্টগ্রাম-১০ আসনের মসজিদগুলোর ইমাম-মুয়াজ্জিনকে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদানের চেক দিয়েছেন বলে তার প্রতিদ্ব›দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলম রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন।
এছাড়া গত ২২ ডিসেম্বর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড, সিটি করপোরেশনের অধীন আব্বাস পাড়া জামে মসজিদে নৌকার প্রার্থী মহিউদ্দিন উপস্থিত থেকে ২০-২৫টি মসজিদের অনুক‚লে এক লাখ টাকা করে, গত ২৩ ডিসেম্বর মধ্যম রামপুর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন নতুন বাজার জামে মসজিদে তার পক্ষে দেলোয়ার হোসেন খোকা ৫২ হাজার টাকা করে ২১টি মসজিদ-মন্দিরের প্রতিনিধির মাঝে অনুদানের চেক বিতরণ করেন বলে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটি জানতে পারে।
ইসির অনুসন্ধান কমিটি বেশ কয়েকটি মসজিদ-মন্দিরে অনুদানের চেক বিতরণের সত্যতা পেয়ে মামলার নির্দেশ দেয়। পরে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর বিধি-৩ ধারার লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মহিউদ্দিন বাচ্চুর বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মামলার ধার্য্য দিনেও উপস্থিত ছিলেন না এমপি মহিউদ্দিন বাচ্চু। ফলে ওইদিন বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সালাউদ্দিন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। পাশাপাশি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ১২ মে নির্ধারণ করেন আদালত। এর আগেই আদালতে আতœসমর্পণ করেন সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু।
প্রসঙ্গত, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১০ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মহিউদ্দিন বাচ্চু।