সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকসহ (বিদিশা এরশাদ) তিনজনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। মোরশেদ মঞ্জুর রুবেল নামের এক ব্যবসায়ী কোটি টাকা আত্মসাৎ ও জিনিসপত্র চুরির অভিযোগ এনে এ মামলার আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশের জন্য আগামী ৫ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হাশেম ৩০ জুলাই মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ২৯ জুলাই সোমবার বিকেলে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়ার আদালতে মামলাটির আবেদন করা হয়।
মামলার বাদি মোরশেদ মঞ্জুর রুবেল নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন শফি টাওয়ারের বাসিন্দা। তিনি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার রুবেল সুপার মার্কেট ও ঢাকার ইসলামপুরের মেসার্স লতিফা বাহাদুর ফেব্রিক্স নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক। আর বিদিশা সিদ্দিক ছাড়া বাকী দুই বিবাদী হলেন, গাইবান্ধার বাসিন্দা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ ও শাহজাদা খন্দকার।
মামলার আবেদনে বলা হয়, বিদিশার স্বামী তথা এরিক এরশাদের বাবার মৃত্যুর পর পারিবারিক বিভিন্ন জটিলতায় বিদিশা ও এরিক আর্থিক অসুবিধায় পড়ে। মানবিক কারণে বাদী তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রচুর আর্থিক সাহায্য করেন। ভাড়ায় লাগিয়ে এ অর্থ পরিশোধের জন্য বিদিশার পরামর্শে এরিক তাদের ট্রাস্টের পাঁচটি নিশান, জিপ, মাইক্রোবাস আমমোক্তারমূলে বাদীর কাছে হস্তান্তর করেন।
বিদিশাও গত বছরের ১০ ডিসেম্বর ৩৯ লাখ টাকায় তার মালিকানাধীন একটি সিডান কার বাদীর কাছে বিক্রি করে দখল হস্তান্তর করেন এবং মালিকানা হস্তান্তরের জন্য হলফনামাও সম্পাদন করে দেন। এছাড়া বিভিন্ন তারিখে বিদিশা ও তার ছেলে এরিকের কঠিন সময়ে বাদী নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ধারও দেন। বিপরীতে বিদিশার পরামর্শে এরিক বাদীকে ৯০ লাখ টাকার দুটি চেক প্রদান করেন।
বিদিশা অপর দুই বিবাদীর সহযোগীতায় গত ২১ এপ্রিল বাদীর খুলশীর শফি টাওয়ারের বাসা থেকে বৃদ্ধ বাবা মাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা মূল্যের ২২ টি হাতঘড়ি, মিচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, এন আর বি গ্লোবাল ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের অলিখিত ও স্বাক্ষরবিহীন ৬টি চেক বই, দুটি স্যামসাং এনড্রয়েড মোবাইল ও একটি অপ্পো মোবাইল, বিদিশার কাছ থেকে কেনা গাড়ির ডকুমেন্টস ফাইল, এরিক থেকে কেনা গাড়ির ডকুমেন্ট ও স্ট্যাম্প, বিদিশার সাথে ৩ টি ব্যবসায়িক চুক্তি ও ধানমন্ডি এলাকায় অবস্থিত বিদিশার কাছ থেকে নেয়া একটি রেস্টুরেন্টের দোকান ভাড়ার দলিল, মোটর সাইকেলের ক্রয় রশিদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি ও দলিলাদি, ব্যাগে রক্ষিত নগদ ৪০ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।
এ সময় বাদীর পিতা মাতাকে বলা হয়, তোমাদের পোলা আমাদের ম্যাডামের সাথে টক্কর দিতে আসছে, বাঁচতে চাইলে ম্যাডামের পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে হবে। বাদীর বাসা থেকে এসিসহ আরো বেশ কিছু জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও মামলার আবেদনে বলা হয়। বিবাদীরা একটি সংঘবদ্ধ দল, যারা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে মানুষের সর্বস্ব লুটে খায় উল্লেখ করে আবেদনে আরো বলা হয়, প্রাপ্য ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা শোধের জন্য এরিককে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করলে বিবাদী বিদিশা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীকে প্রাণ নাশের হুমকি দেন।