চট্টগ্রাম মহানগরীর পাহাড়তলী থানার এ কে খান মোড়ে ইদ্রিস আলী মার্কেটের জননী ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর নামে এক দোকানের ব্যবসায়ীকে মারধর করে ২ লাখ টাকা ছিণতাই ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও ওই ব্যবসায়ীর ছিনতাই হওয়া টাকা বা ছিনতাইকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। বরং পাহাড়তলী থানার ওসি (তদন্ত) মো. রাশেদ বলছেন, এ ধরণের ঘটনা সম্পর্কে থানা পুলিশ কেউ কিছুই জানে না। এমন কোন অভিযোগ এখনো পর্যন্ত থানায় আসেওনি।
বৃৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দিনগত রাত ৯টায় ঢাকা মেইলকে এ তথ্য জানান ওসি (তদন্ত) মো. রাশেদ। তবে স্থানীয়রা বলছেন, বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাত ১১ টায় এ ঘটনার পর পাহাড়তলী থানার এস আই শাহনেওয়াজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে জানতে এস আই শাহনেওয়াজকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার দিনগত রাত ১১টার দিকে স্থানীয় সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মী পরিচয়ে ইদ্রিস আলী মার্কেটের জননী ডিার্টমেন্টাল স্টোরের ব্যবসায়ী মিজানকে মারধর করে ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণেও এর প্রমাণ মিলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী পরিচয়ে সুবিধাভোগী জনৈক আনোয়ার ও গুরাইয়্যার নেতৃত্বে স্থানীয় চিহ্নিত সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কাকন, দিদার, বেলাল, ইমন, ফোরকান, হান্নান, সাদ্দাম, ইউনুস, সেলিমসহ কয়েকজন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে অর্তকিত হামলা করে ব্যবসায়ী মিজানকে মারধর করে জোরপূর্বক ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
বিষয়টি জানালে পাহাড়তলী থানার এস. আই শাহনেওয়াজের নেতৃত্বে পাহাড়তলী থানার একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু ছিনতাইয়ের ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও টাকা উদ্ধার কিংবা কোন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে দাবি করেন উক্ত মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অর্জিত নতুন স্বাধীনতার এটাই কি প্রতিদান। এমন প্রশ্ন রেখে এ. কে. খান মোড়ের ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের কাছে তাদের নিরাপত্তাসহ সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে টাকা উদ্ধারের দাবী জানান।
নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ব্যবসায়ীরা জানান, বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে এসব চাঁদাবাজ পাহাড়তলী এলাকায় নিয়মিত চাঁদাবাজি করেছে। সরকার পতন পরবর্তী ভোল পাল্টে এই চাঁদাবাজ চক্র এলাকায় তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অব্যাহত রেখেছে। বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। অথচ প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম এ প্রসঙ্গে বলেন, চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে ইতোমধ্যে চাঁদাবাজির সময় ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এর মধ্যে পাহাড়তলী থানার হোটেল মেরিন সিটির সামনে থেকে চারজন রয়েছে।
মাহবুব আলম বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির পেছনে খুচরা ও পাইকারি বাজারকেন্দ্রিক বিভিন্ন চাঁদাবাজিকে অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে সদর দপ্তরের নির্দেশে এই অভিযান চালানো হয়েছে।