বৃহস্পতিবার- ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪

হামাসের এক হামলায় ২১ সেনা নিহতের পর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ইসরায়েলের

print news

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। সেখানে হামাসের তীব্র বাধার মুখে পড়েছেন তারা। গাজায় সোমবার হামাসের একক হামলায় ২১ ইসরায়েলি সেনা প্রাণ হারায়। এরপর মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দেয় ইসরায়েল।

সংবাদ মাধ্যম এপি‘র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে প্রায় ৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধে ইসরায়েলি সেনা নিহতের এটিই সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনা।

ইসরায়েলের প্রধান সামরিক মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, ইসরায়েলি সেনারা মধ্য গাজায় দুটি ভবন ধ্বংস করার জন্য বিস্ফোরক প্রস্তুত করছিলেন। তখন হামাসের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোঁড়ে। এ সময় দুই তলা দুটি ভবন সেনাদের ওপর ধসে পড়ে।

এপি জানিয়েছে, ভারী মৃত্যুর সংখ্যা ইসরায়েলকে আক্রমণ থামাতে বা এমনকি এটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার আহ্বানে নতুন গতি আনতে পারে। বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলি হতাহতের কারণে অতীতের সামরিক অভিযান বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন :  রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিসিও অফিসের ঘুষের কবলে আউটসোর্সিং শ্রমিকরা

এদিকে নেসেটের অধিবেশনে ঢুকে জিম্মিদের স্বজনদের বিক্ষোভের পর গাজা উপত্যকায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। দুই মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসরের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কাছে প্রস্তাবটি পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবে হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তি প্রক্রিয়াকে কয়েকটি স্তর বা পর্যায়ে ভাগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জিম্মিদের মধ্যে যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন, সবার আগে তাদের মুক্তি চায় ইসরায়েল। পরবর্তী পর্যায়গুলোতে আটক ইসরায়েলি নারী সেনাসদস্য, বেসামরিক তরুণ-তরুণী ও পুরুষ সেনাসদস্যদের মুক্তির ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, এই জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তবে কতজনকে মুক্তি দেওয়া হবে, সেই সংখ্যা এখনও প্রকাশ করা হয়নি।

আরও পড়ুন :  রাঙ্গুনিয়ার পোল শিক্ষিকা মালেকা দু‘বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরীর স. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে!

প্রস্তাবে যুদ্ধ বন্ধের কোনো কথা বলেনি ইসরায়েল। তবে তারা গাজার প্রধান শহরগুলোতে ইসরায়েলি সেনাদের উপস্থিতি হ্রাস করার কথা জানিয়েছে। এবং বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের নিজ বাড়িতে ফেরার অনুমতির কথা বলা হয়েছে।

ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রীসভার একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, জিম্মিদের মুক্তির পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই মাস সময় নেবে বলে ধারণা করছেন তারা। এই সময়সীমায় গাজায় কোনো অভিযান চালানো হবে না। তবে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীর একজন মিডিয়া কর্মকর্তা আনাদোলুকে বলেছেন, মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে গাজায় দুই মাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পায়নি হামাস।

অফিসিয়ালি তারা প্রস্তাবটি পাননি উল্লেখ করে লেবাননে হামাসের মিডিয়া মুখপাত্র ওয়ালিদ কিলানি বলেন, হামাসের প্রধান শর্ত একটি পূর্ণ এবং ব্যাপক যুদ্ধবিরতি, অস্থায়ী নয়। যদি এই শর্তে ইসরায়েল রাজি হয় তবে বন্দী বিনিময় নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

আরও পড়ুন :  রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিসিও অফিসের ঘুষের কবলে আউটসোর্সিং শ্রমিকরা

অবরুদ্ধ উপত্যকায় দেশটির নির্বিচার হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৫ হাজার ২৯৫ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশই শিশু। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে। এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তীব্র ঠান্ডা বিরাজ করছে। একই অবস্থা ফিলিস্তিনেও। লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে এই শীতে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, সোমবার দক্ষিণ গাজা উপত্যকার শহর খান ইউনিসে ইসরায়েলের ক্রমাগত বোমা হামলায় অন্তত ৪০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহত হয়েছে ১৯০ ফিলিস্তিনি।

মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় নভেম্বরের শেষের দিকে সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতির অংশ হিসাবে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীর মুক্তির বিনিময়ে হামাস ১০০ জনেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেয়। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, হামাস এখনও ১৩৬ জনকে বন্দী করে রেখেছে।

ঈশান/খম/সুপ

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page