বৃহস্পতিবার- ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪

বাঁশখালীর তিন গ্রামের মানুষের জীবন পাল্টে দিয়েছে একটি সড়ক

print news

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর ছনুয়া ইউনিয়নের খুদুকখালী, আবাখালী ও মধুখালী গ্রাম। ওখানকার বেশিরভাগ মানুষের পেশা লবণ চাষ ও মৎস্য শিকার করা। এই তিন গ্রামের পাশ ঘেঁষে বয়ে গেছে জলকদর খাল। সেখানকার মানুষের চলাফেরার একমাত্র মাধ্যম জলকদর খালের বেড়িবাঁধ।

বেড়িবাঁধ দিয়ে হাঁটু পরিমাণ কাঁদা মাড়িয়ে যাতায়াতে খাল পাড়ের মানুষের জীবনধারা ছিল দূর্বিষহ। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে দূর্ভোগের সীমা ছিল না। প্রসূতি মায়েদের নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হতো। কিন্তু এই তিন গ্রামের মানুষের পূর্বের জীবনধারা বদলে দিয়েছে আলহাজ্ব মৌলভী নজরুল ইসলাম সড়ক।

জানা যায়, এই প্রান্তিক জনপদের অধিকাংশ বাসিন্দার জীবন কিনা বেড়ে উঠছে চিকিৎসার অভাবে স্বজন হারানোর বেদনাময় স্মৃতি নিয়ে। অগ্নিকান্ডের সময় দমকল বাহিনীর গাড়ি প্রবেশ করতে পারতো না। অসুস্থ রোগীকে কোলে করে প্রায় এক কিলোমিটার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তারপর গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিতে হয়। আর এই সময়ের মধ্যে রোগী মারা যান।

আরও পড়ুন :  রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিসিও অফিসের ঘুষের কবলে আউটসোর্সিং শ্রমিকরা

অথচ মাত্র ৫ কিলোমিটার রয়েছে ছনুয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এছাড়া ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার আগে এখন আর রোগী মারা যায় না ছনুয়ার তিন গ্রামে।

Ctg Banshkhali news 19.05 2.jpeg
আগের সড়ক

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এর ৬৯ লাখ টাকায় নির্মিত আলহাজ্ব মৌলভী নজরুল ইসলাম সড়ক বদলে দিয়েছে লাখো মানুষের জীবন। খুদুকখালী নুরু মিয়ার দোকান থেকে মধুখালী পর্যন্ত ইটের এই রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় ২ কিলোমিটার।

আরও পড়ুন :  রাঙ্গুনিয়ার পোল শিক্ষিকা মালেকা দু‘বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরীর স. প্রাথমিক বিদ্যালয়ে!

মধুখালী গ্রামের আজিজুর রহমান পাড়ার বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, আমার বাড়ির সামনের বেড়িবাঁধে গাড়ি চলাচল করবে আর গাড়িতে করে বাজারে যাবো; এ কথা কল্পনার বাইরে ছিল। এখন রাস্তা নির্মাণ হওয়ার কারণে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ায় সহজে উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে পারি। আমাদের বাপ-দাদার পেশা মাছ ধরা ও লবণ চাষ করা। এখন লবণও পরিবহন করা যায় সহজে।

ছনুয়া উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি লায়ন মো. আমিরুল হক এমরুল কায়েস বলেন, জলকদর খালের পাড়ের বেড়িবাঁধের রোড আইডি ছিল না। আমি ঢাকা এলজিইডি অফিসে গিয়ে এই রাস্তার আইডি করেছি। অনেক তদবির করেছি এমপি সাহেবের কাছে গিয়ে। অবশেষে তিন গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের কষ্ট দূর করতে সক্ষম হলাম। আমরা এমপি মহোদয়ের প্রতি কৃতজ্ঞ। ওনি ডিও লেটার না দিলে এই রাস্তার চেহারা পাল্টে যেতো না। এই বেড়িবাঁধ আগে জলকদর খালের জোয়ারের পানিতে ভেসে যেতো। এখন ব্রিক সলিং দ্বারা উন্নয়ন হওয়ায় আর বেড়িবাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

আরও পড়ুন :  রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিসিও অফিসের ঘুষের কবলে আউটসোর্সিং শ্রমিকরা

চট্টগ্রাম-১৬ বাঁশখালী আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ছনুয়া উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি এমরুল কায়েস এসেছিলেন আমার কাছে ওই রাস্তার উন্নয়নের দাবি নিয়ে। তিনি বললেন এক কোটি টাকা মতো দরকার। তবে টাকা দিতে হবে না। শুধু ডিও লেটার দিলে হবে। তখন আমি ওই রাস্তার উন্নয়নের জন্য ডিও লেটার ইস্যু করি। এখন ওই রাস্তার উন্নয়ন দৃশ্যমান।

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page