বিসিবির হাইপারফরম্যান্স (এইচপি) ইউনিটের এবারের ক্যাম্পে চমক নাঈম হোসেন সাকিব। জাতীয় লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ কিংবা প্রিমিয়ার লিগে না খেললেও এইচপিতে সুযোগ পেয়েছেন সিলেটের এ লেগস্পিনার।
খবর নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ও স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের পরামর্শেই সাকিবকে এবারের ক্যাম্পে ডেকেছে এইচপি। অথচ এই সাকিব ছিলেন বিসিবিরই একজন সম্ভাবনাময় লেগস্পিনার। প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকলে এতদিনে হয়তো জাতীয় দলেও সুযোগ হয়ে যেত তার, এমনটাই মনে করেন সিলেটের স্থানীয় কোচরা।
কিন্তু ক্লাবের অবহেলায় আর লম্বা চোটে চার বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে তাকে খুঁজে পেলেন হাথুরু-হেরাথ। সিলেটে আয়ারল্যান্ড সিরিজের দুই প্রস্তুতিতে তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমদের নেটে দেখা গিয়েছিল সাকিবকে। গুগলি, টপ স্পিন, স্টক ডেলিভারি—তিন ধরনের অস্ত্রে হেরাথকে মুগ্ধ করেছিলেন তিনি। এর আগে হেরাথের দুটি স্পিন ক্যাম্পেও সুযোগ হয়েছিল তার। এর পরই তাকে এবারের এইচপি ক্যাম্পে ডাকার সিদ্ধান্ত নেন হেরাথ।
বিসিবির নির্বাচকদের সূত্রে জানা গেছে, সাকিবকে ঘিরে খুব আগ্রহী হেরাথ। তার ধারণা, ভালো পরিচর্যা করা হলে দারুণ কিছু হতে পারেন ৬ ফুট উচ্চতার এ লেগস্পিনার। সাকিবের অনুশীলন সুবিধা নিশ্চিত করতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজারকে আলাদা করে বার্তা দিয়েছেন হেরাথ।
সিলেটের স্থানীয় কোচদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সঙ্গে বিভিন্ন ক্যাম্পে ছিলেন সাকিব। একই দলে ছিলেন সাম্প্রতিক জাতীয় দলের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে অভিষেক হওয়া লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনও। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, টুর্নামেন্ট শুরুর আগে চোটে পড়ে থেমে যায় সাকিবের বিশ্বকাপ যাত্রা। চোট কাটিয়ে প্রথম বিভাগের একটি দলে খেলেছিলেন এ স্পিনার। দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ভালো পারফর্ম করলেও একাদশে আর সুযোগ হয়নি তার। এর পর থেকেই আড়ালে হারিয়ে যান। সর্বশেষ এনসিএলে সিলেট বিভাগের প্রাথমিক দলে জায়গা পেলেও একাদশে সুযোগ হয়নি মৌলভীবাজার জেলার এ রিস্ট স্পিনারের।
সাকিবকে ভালো জানেন বর্তমানে নারী দলের সঙ্গে কাজ করা সিলেটের কোচ ইমন মাহমুদ। এক সময় সিলেট বিভাগীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছিলেন তিনি। সাকিবকে নিয়ে জানতে চাইলে ইমন মাহমুদ বলেন, ‘আমি কখনো সাকিবকে আশাহত হতে দিইনি। আমি সব সময় সাপোর্ট দিয়েছি, যখন কোথাও সুযোগ হয়নি। কারণ ওর ভেতর সেই গুণ দেখেছিলাম। আমার বিশ্বাস, সাকিব দুই বছর ভালো পরিচর্যার মধ্যে থাকলে বাংলাদেশের জন্য সম্পদ হতে পারে।’ অথচ ৬ বছর আগে সাকিবের সন্ধান পেয়েছিল বিসিবি।
স্পিনারের খোঁজে বিসিবি ও মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির আয়োজনে ‘খোঁজ : দ্য নাম্বার ওয়ান স্পিনার’ কর্মসূচিতে ১ হাজারের মধ্যে সেরা দশের সংক্ষিপ্ত তালিকায় তৃতীয় হয়েছিলেন তিনি। সেই কর্মসূচির প্রধান বিচারক ওয়াহিদুল গণি সে সময় বলেছিলেন, ‘আগামী কয়েক বছর তাদের নিয়ে আরও কাজ করতে হবে, সময় দিতে হবে।’ সাকিবের ক্ষেত্রে সেটা হয়েছিল কি না, সে প্রশ্নের উত্তর জানা যায়নি। তবে সেরকম কিছু হলে হয়তো একজন লেগস্পিনারের আক্ষেপ ঘুচিয়ে দিতে পারতেন তিনি।