আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে পাহাড়ি সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) সীমান্তবর্তী ভারতের মিজোরাম ও মিয়ানমার থেকে সন্ত্রাসী এনে শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের পেজে সন্ত্রাসী সংগঠনটি এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
বিষয়টি স্বীকার করেছেন বান্দরবানের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি নজরে আসায় সরকারের উচ্চ মহলকে জানানো হয়েছে। কেএনএফের তৎপরতা থামাতে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে।
সূত্র জানায়, কেএনএফ নিজেদের শক্তি বাড়াতে বাংলাদেশ, ভারত ও মিয়ানমারের ত্রিদেশীয় সীমান্তের দুর্গম পাহাড়ে একটি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে তুলেছে। এলাকাটি পড়েছে বান্দরবানের সীমান্তবর্তী অংশে।
এ ছাড়া নব্য জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সদস্যদের অর্থের বিনিময়ে পাহাড়ের দুর্গম স্থানে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে সংগঠনটি। বিষয়টি নজরে আসার পর যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করেছে। এই অভিযানে ইতিমধ্যে বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি, থানচি উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে নব্য জঙ্গি সংগঠনটির অর্ধশত সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেএনএফের অনেক সদস্যও গ্রেপ্তার হয়েছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে কেএনএফ পিছু হটলেও এখনো মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছে।
সর্বশেষ ১৬ মে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দলের ওপর কেএনএফ সন্ত্রাসীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে দুই সেনাসদস্য নিহত হন। আহত হন দুই সেনা কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসন সূত্র বলেছে, নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে পর্যটক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা এখনো বহাল রয়েছে।
রুমা থানার ওসি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, কেএনএফের নেতা নাথান বমের নির্দেশে রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়িতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। গত অক্টোবর থেকে কেএনএফ, ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও মগ বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধে ১৩ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া কেএনএফ হামলায় তিন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। নাথান বমের বিরুদ্ধে রুমা থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। তাঁকে ধরতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।
জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন নিরাপত্তার মুখ্য দায়িত্বে থাকা মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর উত্তম) বলেন, বিভিন্ন জায়গা থেকে সেনা ক্যাম্প প্রত্যাহার করার মতো ভুল সিদ্ধান্তের ফলে পরিস্থিতি আবার অস্থির হচ্ছে। এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত সেনা তৎপরতা বাড়ানো না গেলে অস্থিরতা আরও বাড়বে।