চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ শীতলপুর গ্রামে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এই এলাকার প্রতিটি পরিবারের রয়েছেন একজন বা তার অধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ডেঙ্গু রোগী।
আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশই বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অ্যান্ড ট্রপিক্যাল ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আবার কেউ কেউ বাসায়ও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিআইটিআইডি হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ সোমবার (৩ জুলাই) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত অর্ধশতাধিক রোগী বিআইটিআইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গত শনিবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে অধিকাংশের বয়স ছিল ২০ থেকে ৬০ এর ভেতরে।
তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী রয়েছে সীতাকুন্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দক্ষিণ শীতলপুর এলাকার। এছাড়া রয়েছে নগরীর বিশ্ব কলোনি, কর্নেল হাট, উত্তর কাট্টলী, সীতাকুন্ডের কুমিরা, ভাটিয়ারী ও সলিমপুর ইউনিয়ন এলাকার রোগী। এক এলাকায় এত রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগের। ডেঙ্গু আক্রান্তদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সীতাকুন্ড উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, গত এক মাসে হাসপাতালের বহিঃর্বিভাগে জ্বরের উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা বেশ কিছু রোগীর রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তবে তারা হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বহিঃর্বিভাগ থেকে চিকিৎসাসেবা নিয়ে বাড়িতে ফিরে গেছেন। উপজেলায় ডেঙ্গুর প্রকোপ ঠেকাতে প্রতিটি এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে উঠান বৈঠক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান তিনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিলেও তারা এখনো চিহ্নিত করতে পারেননি ডেঙ্গুর ধরন। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীদের বিভিন্ন উপসর্গের পাশাপাশি অধিকাংশেরই রক্তচাপ কমে গেছে। সেই সঙ্গে কমেছে রক্তের অনুচক্রিকা (প্লাটিলেট)।
ডেঙ্গুর চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরা দক্ষিণ শীতলপুর এলাকার বাসিন্দা ও পিডিবির প্রকৌশলী পলাশ ভৌমিক জানান, শুধু তিনি নন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে তার আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছে তার ছোট ভাই শিমুল ভৌমিক, তার মা প্রতীমা রানী ভৌমিক ও তার বৃদ্ধ বাবাকে।
কুমিরা বাজার এলাকায় অরবিট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক কাজী রেজাউল করিম বলেন, গত এক সপ্তাহে দক্ষিণ শীতলপুর গ্রাম থেকে জ্বর নিয়ে পরীক্ষা করাতে আসা সকল রোগীর ডেঙ্গুর উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদেরকে বিআইটিআইডি হাসপাতালে পাঠানো হয়।