ইন্ডিয়া নাকি ভারত, গত কয়েক দিন ধরে দেশটির এই দুই নাম নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক চলছে। ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দিতে চায় এমন গুঞ্জন আগে থেকেই শোনা যাচ্ছে।
গত শনিবার জি-২০ সম্মেলনের মঞ্চেও নতুন করে এই আলোচনা আরও উসকে দেওয়া হয়। সম্মেলনে মোদির সামনে যে নামফলক রাখা হয়েছে, সেখানে ইংরেজিতে ইন্ডিয়া না লিখে লেখা হয়েছে ভারত। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনা ভারতের নাম পরিবর্তনের জল্পনাকে আরও জোরালো করেছে।
ইন্ডিয়াকে ‘ভারত, ‘ভারতা’, ‘হিন্দুস্তান’ নামেও ডাকা হয়। তবে সরকারি-বেসরকারিভাবে ইন্ডিয়া ও ভারত দুই নামে এই দেশকে ডাকা হয়। অবশ্য ঐতিহাসিকভাবে ইংরেজিতে যখন লেখা হয় বা কোথাও যোগাযোগ করা হয় তখন ‘ইন্ডিয়া’ নাম ব্যবহার করা হয়।
তবে গত সপ্তাহে ভারতের প্রেসিডেন্ট দ্রোপদী মুর্মু জি-২০ নেতাদের সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজের আমন্ত্রণপত্রে নিজেকে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারত’ নামে পরিচয় দিয়েছেন। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। পরে গত মঙ্গলবার রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইন্দোনেশিয়া সফরসূচির ছাপানো সরকারি কার্ডে তাকে ‘ইন্ডিয়া’র বদলে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত’ লেখা হয়েছে।
সবশেষ গত শনিবার মোদি যখন জি-২০ সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন, তখন তার সামনের টেবিলে যে নামফলক ছিল, সেখানে লেখা ছিল ‘ভারত’। অবশ্য জি-২০ সম্মেলনের লোগোতে হিন্দি ও ইংরেজিতে ‘ভারত’ ও ‘ইন্ডিয়া’ দুই নামই লেখা হয়েছে। এই ধরনের নামফলকে অতীতে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।
শনিবার হিন্দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বলেন, ‘জি-২০-এর প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিদেশি প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাচ্ছে ভারত।’
‘ভারত’ নামের পক্ষের সমর্থকরা বলছেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা ‘ইন্ডিয়া’ নাম দিয়েছে। তবে ঐতিহাসিকরা বলছেন, কয়েক শতাব্দীর উপনিবেশ শাসনের আগেও ‘ইন্ডিয়া’ নামটি ছিল। বিজেপির আদর্শিক সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) সবসময় তাদের দেশের নাম ‘ভারত’ করার পক্ষে।
তবে মোদির বিরোধীরা বলছেন, বিজেপিবিরোধী ২৮টি দলকে নিয়ে নতুন করে গঠিত ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স সংক্ষেপে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কারণে সরকার ভারতের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা করছে।