এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন পূরণ না হলেও জয়ের সুবাতাস দিয়ে মিশন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ১১ বছর পর এশিয়া কাপের ভারতের বিপক্ষে জয় অবশ্যই দলকে অনেক আত্মবিশ্বাসী করবে।
এবারের এশিয়া কাপে একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট করেছে কোচ এবং টিম ম্যানেজমেন্ট। কখনো ৬-৭ নম্বরে ব্যাট করা মিরাজ করেছেন ওপেনিং। তৌহিদ হৃদয় কখনও নেমেছেন ৩ নম্বরে আবার কখনও ৪ নম্বরে। আটটি ব্যাটসম্যান দিয়েও দল তৈরি করতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে।
এসব এক্সপেরিমেন্ট কখনও সফল হয়েছে আবার কখনও এনেছে বিপর্যয়। মোটামুটি সব ক্রিকেটারকেই একবার হলেও বাজিয়ে দেখতে চেয়েছেন কোচ। এসব পরীক্ষা নিরীক্ষার মূল কারণ মূলত সেরাদের নিয়ে বিশ্বকাপের দল চূড়ান্ত করা। কিন্তু বেশি পরীক্ষা করতে গিয়ে এখন হিতে বিপরীত অবস্থা কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের।
ভারতের বিপক্ষে এই জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহে বলেন, এই এশিয়া কাপে যদিও আমাদের দলীয় পারফরম্যান্স কম হয়েছে। তবে আমরা অনেক ভেন্যুতে এবং উইকেটে খেলেছি। আমরা অনেক খেলোয়াড়কে পরখও করে নিতে পেরেছি। এখন (বিশ্বকাপের জন্য) ১৫ সদস্য বেছে নেওয়া অনেক কঠিনও হয়ে গেল।
তবে এশিয়া কাপের পর বিশ্বকাপের দলে কারা থাকবেন সেটি নিশ্চিত হওয়া না গেলেও কারা বাদ পরছেন তার একটি ধারণা অবশ্যই পাওয়ায়া যায়। যারা যারা বাদ পরতে পারেন তাদের মধ্যে সবার প্রথমে রয়েছেন:
নাঈম শেখ
একবার দুইবার নয়। টানা ছয় ম্যাচে সুযোগ পেয়েছেন ওপেনার নাঈম শেখ। কিন্তু সুযোগ পেয়েও কিভাবে সেই সুযোগ কিভাবে নষ্ট করতে হয় সেটি কেউ চাইলেই নাঈম শেখের কাছ থেকে শিখতে পারবেন। শেষ ৬ ম্যাচে তার রান ৯, ০, ১৬, ২৮, ২০, ২১। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পাররেননি তিনি। আউট হয়েছেন বাজে, দৃষ্টিকটু শট খেলে। আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজে এবং বিশ্বকাপে তার দলে জায়গা হবে কিনা সেটি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তামিম ও লিটন ওপেন করলে ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে থাকতে পারেন তানজিদ তামিম।
এনামুল হক বিজয়
একেবারেই পরিকল্পনার বাইরে থাকা এনামুল হক বিজয় অনেকটা নাটকীয়ভাবে এশিয়া কাপ দলে জায়গা পান। কিন্তু একাদশে খেলার সুযোগ হয়েছে মাত্র একটি ম্যাচে। গতকাল ভারতের বিপক্ষে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন তিনি। গতকাল তার ব্যাট জ্বলে উঠলেই হয়ত তার জায়গা হয়ে যেতে পারত বিশ্বকাপ দলে ব্যাকআপ ওপেনার হিসেবে। কিন্তু সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেননি বিজয়। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি হয়ত বাদ পরতে যাচ্ছেন। আর সেটি হলে বিশ্বকাপের তার না থাকা মোটামুটি নিশ্চিত।
শামীম হোসেন পাটোয়ারী
লোয়ার মিডিল অর্ডারের ব্যাটসম্যান শামীম হোসেনও সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি। লোয়ার মিডল অর্ডারের হাল ধরার জন্য তার উপর ভরসা করেছিল দল। কিন্তু তিনিও নাঈমের দলেই যোগ দিলেন। শেষ ৪ ম্যাচে তার রান ছিল ১১, ১৬, ৫, ১। বার বার বাজে অপ্রয়োজনীয় শট খেলে আউট হয়েছেন এবং নিজের রোলটা ঠিকমত প্লে করতে পারেননি। তাই তিনিও হয়ত এশিয়া কপের পর দল থেকে বাদ যেতে পারেন। তার বলদে দলে জায়গা হতে পারে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের।
হাসান মাহমুদ
এবার বোলিংয়ে চমক দেখিয়েছেন বাংলাদেশ পেসাররা। তাসকিন শরিফুলের বোলিংয়ে পেসাররাই ছিলেন বোলিং অ্যাটাকের স্তম্ভ। কিন্তু তাসকিন শরিফুলের মত নিজে খুব একটা রাঙাতে পারেননি মুস্তাফিজের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেসার হাসান মাহমুদ। এশিয়া কাপের ৩ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি এবং রানও দিয়েছেন তুলনামূলক অনেক বেশি। গতকাল ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ডেথ ওভারে মুস্তাফিজ যে বোলিং করেছেন তাতে তিনিই দলে থাকছেন এবং হয়ত বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পরছেন এই তরুণ পেসার।