বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) মুখোমুখি হয়েছে নিউজিল্যান্ড এবং ইংল্যান্ড। কিউইদের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে আজ টসে হেরে আগে ব্যাট করে ইংলিশরা। ব্যাট হাতে আশানরূপ পারফর্ম্যান্স করতে না পারায় জস বাটলারের দল থামে ২৮২ রান করেই।
পরে ইংল্যান্ডের দেয়া ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও প্রবল প্রতাপে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ওপেনার ডেভন কনওয়ে এবং রাচীন রবীন্দ্র মিলে করেছেন রেকর্ড গড়া ২৭৩ রান। বিধ্বংসী এ জুটিতেই ইংলিশদের বিপক্ষে ৯ উইকেটের জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড।
২৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউজিল্যান্ডের। দলীয় ১০ রানেই ওপেনার উইল ইয়াং কে হারায় তারা। পরে অবশ্য দুর্দন্ড প্রতাপে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কিউইরা। আরেক ওপেনার কনওয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে রবীন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে ইংলিশ বোলারদের উপর ব্যাট হাতে চালিয়েছেন রোলার কোস্টার।
ফলে আর কোনো উইকেট না হারিয়েই ৩৬.২ ওভারে ২৮৩ রানের দেখা পেয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। এদিকে মারমুখী ব্যাটিংয়ে আজ কনওয়ে এবং রবীন্দ্র মিলে গড়েছেন অপরাজিত ২৭৩ রানের জুটি। ইংলিশ বোলারদের কিউই এ দুই ব্যাটার মিলে করেছেন তুলোধুনো।
ব্যাট হাতে মারমুখি ব্যাটিংয়ে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন কনওয়ে। নিজের প্রথম বিশ্বকাপ ম্যাচেই শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকেন ১২১ বলে ১৯ চার এবং ৩ ছয়ে ১৫২ রান করে। অন্যদিকে কনওয়েকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন রবীন্দ্র। ব্যাট হাতে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই তিনিও পেয়েছেন অপরাজিত শতকের দেখা, করেছেন ৯৬ বলে ১২৩ রান।
কনওয়ে-রবীন্দ্রের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই আজ ৯ উইকেট আর ৮২ বল হাতে রেখেই জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের হয়ে বল হাতে একটি উইকেট পেয়েছেন স্যাম কারান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাটিং ইনিংসের সূচনা করেন দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো এবং ডেভিড মালান। এ দুজন মিলে কিউই বোলারদের বিপক্ষে দেখেশুনেই খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দুই ওপেনার মিলে গড়েন ৪০ রানের জুটি।
তবে ইংল্যান্ডের এ জুটি ম্যাট হেনরির আঘাতে আর বেশি দূর এগোতে পারেনি। অষ্টম ওভারে হেনরির বলে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরেন মালান। আউট হবার আগে ২৪ বল খেলে করেছেন ১৪ রান। ইংলিশ এই ওপেনার সাজঘরে ফেরার পর ক্রিজে বেয়ারস্টোর সঙ্গী হন জো রুট।
মালান সাজঘরে ফেরার পর বেয়ারস্টোর সঙ্গে জুটি গড়ার পথে ছিলেন রুট। তবে এ জুটি স্থায়ী হয়নি। বেয়ারস্টো ফিরে যান স্যান্টনারের বলে ডেরিল মিচেলের ক্যাচ হয়ে। সাজঘরে ফেরার আগে ইংলিশ এই ওপেনার ৪ চার এবং ১ ছয়ে করেছেন ৩৩ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ক্রিজে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন হ্যারি ব্রুক। এই টপ অর্ডার ব্যাটার দ্রুত রান তুলতে গিয়ে রাচিন রবীন্দ্রর ঘূর্ণি জালে আটকা পড়েন। ১৬ বলে ২৫ রান করে দলীয় ৯৪ রানের সাজঘরে ফিরেন তিনি। এরপর ক্রিজে রুটের সঙ্গী হন মইন আলী। তবে তিনিও পারেননি দলের হাল ধরতে। রুটের সঙ্গে ২৪ রানের জুটি গড়ে ব্যক্তিগত ১১ রানেই সাজঘরে ফিরেন তিনি।
এদিকে একপ্রান্তে যাওয়া আসার খেলার চললেও অপরপ্রান্ত ঠিকই আগলে রেখেছেন রুট। দেখেশুনে খেলে ঠিকই তুলে নিয়েছেন নিজের ব্যক্তিগত অর্ধশতক। মইন ফেরার পর মাঠে আসা অধিনায়ক জস বাটলারের সঙ্গে গড়েছেন ৭০ রানের জুটি। এ জুটি গড়তে আজ রুটকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন ইংলিশ কাপ্তান। ছিলেন ব্যক্তিগত অর্ধশতকের পথে। তবে ফিফটি থেকে সাত রান দূরে থাকতেই হেনরির বলে লাথামের ক্যাচ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়েছে তাকে।
এরপর ইংল্যান্ডের হয়ে ব্যাট হাতে হাল ধরতে পারেননি আর কেউই। ওদিকে এবারের আসরে প্রথম ফিফটি তুলে নেয়ার রুটও থেমেছেন ৭৭ রানেই। ৮৬ বলে ৪ চার এবং ১ ছয়ে এ রান করেছেন তিনি। তার এই ৭৭ রানের ইনিংসেই শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড থেমেছে ২৮২ রানে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নিয়েছেন ম্যাট হেনরি।