ওয়ানডে বিশ্বকাপ শুরুর তৃতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ধর্মশালায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ব্যাট করতে নেমে সাকিব ও মিরাজের ঘূর্ণি জাদুতে ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রান করেই অলআউট হয় হাশমতউল্লাহ শহীদির দল।
১৫৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে রান আউট হয়ে তানজিদ তামিম সাজঘরে ফেরার পর দ্রুতই বোল্ড আউট হয়ে ফিরে যান লিটন। তবে তৃতীয় উইকেট জুটিতে মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে জয়ের ভীত পেয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ দিকে এই দুই টপ অর্ডারের অর্ধশতকে ভর করে ৩৫ তম ওভারে ৬ উইকেট হাতে রেখে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম জয় তুলে নেয় টাইগাররা।
আফগানিস্তানের দেয়া ১৫৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেননি দুই টাইগার ওপেনার তানজিদ তামিম এবং লিটন দাস। দলীয় ১৯ রানেই রান আউটের শিকার হয়ে ফিরে যেতে হয় তামিমকে। এরপর ক্রিজে লিটনের সঙ্গী হন মেহেদী মিরাজ। তবে মিরাজের সঙ্গে বাংলাদেশের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যেতে পারেননি লিটন। সপ্তম ওভারে ফজল হক ফারুকির বলে বোল্ড হয়ে ১৮ বলে ১৩ রান করেই সাজঘরে ফিরেছেন লিটন।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে মিরাজ ও শান্তর ব্যাটে প্রাথমিক বিপর্যয় সামাল দেয় সাকিব বাহিনী। এই দুই ব্যাটারের ব্যাটে হেসেখেলে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। বল হাতে তিন উইকেট নেওয়ার পর এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম অর্ধশতক তুলে নেন মিরাজ। দুই টপ অর্ডার মিলে তৃতীয় উইকেটে ৯৭ রান যোগ করেন। ব্যক্তিগত ৫৭ রান করে নাভিন উল হকের শিকার হন মিরাজ। শেষ দিকে শান্তর দায়িত্বশীল অর্ধশতকে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করে বাংলাদেশ। টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৯ রান করেন মিরাজ।
এর আগে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে স্কোরবোর্ডে রান তুলেছেন দ্রুত। এই দুই আফগান ওপেনারদের বিপক্ষে সুবিধা করে ওঠতে পারছিলেন না তাসকিন, শরিফুল, মুস্তাফিজরা।
এরপর নবম ওভারে বল হাতে আজ নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে এসেই ব্রেক থ্রু এনে দেন টাইগার অধিনায়ক। তার করা দ্বিতীয় বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফিরেন ইব্রাহিম। ২৫ বলে ৩ চার এবং ১ ছয়ে ২২ রান করে এই আফগান ওপেনার সাজঘরে ফিরলে ভাঙে ৪৭ রানের ওপেনিং জুটি।
ইব্রাহিম ফিরলে ক্রিজে গুরবাজের সঙ্গী হন রহমত শাহ। দুজন মিলে দেখেশুনে খেলে আবার এগিয়ে যাচ্ছিলেন বড় জুটি গড়ার দিকে। জুটি গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৩৬ রান। তবে ষোলতম ওভারে বোলিংয়ে এসেই ফের আঘাত হানেন সাকিব। ওভারের প্রথম বলেই লিটনের ক্যাচে পরিণত হন রহমত। সাজঘরে ফেরার আগে ২৫ বলে করেছেন ১৮ রান।
এদিকে এক প্রান্তে যাওয়া আসার খেলা চলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে ধরে খেলছিলেন আফগান ওপেনার গুরবাজ। টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্যক্তিগত অর্ধ শতকের দিকে। তবে মুস্তাফিজের বলে তানজিদ তামিমেদ দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ফিরে গেছেন ৪৭ রান করেই। এর আগের ওভারে ৩৮ বলে ১৮ রান করা আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহর উইকেট তুলে নিয়েছিলেন মেহেদী মিরাজ। এরপর ২৯ তম ওভারে বোলিংয়ে এসে নাজিবুল্লাহ জাদরানকে বোল্ড আউট করেছেন সাকিব।
এরপরে আর আফগানদের দলের হাল ধরতে পারেননি কেউই। মিরাজের স্পিন জালে ব্যর্থ হয়েছেন রশিদ, মুজিবরা। বাংলাদেশের হয়ে আজ সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব এবং মিরাজ।
ঈশান/মউ/রাফি