সোমবার- ২রা ডিসেম্বর, ২০২৪

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় সঙ্গী পেল জলহস্তি লালপাহাড়

blank
print news

মাসখানেক আগে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় প্রথমবারের মতো এলো পুরুষ জলহস্তি লালপাহাড়। এরপর বেশি দিন একা থাকতে হয়নি লালপাহাড়কে। তার সঙ্গী হয়ে এলো জলহস্তি জলপরী।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ভোর ৫ টায় ঢাকার জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে চট্টগ্রামে এসে পৌঁছে জলপরী। এর আগে গত ২১ সেপ্টেম্বর লালপাহাড়কেও ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়।

প্রাণী বিনিময় প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রংপুর চিড়িয়াখানায় এক জোড়া বাঘ পাঠিয়ে এর বিনিময়ে জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে এই জলহস্তি দ¤পতিকে পেয়েছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। যার মধ্যস্ততা করেছে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়।

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. সাহাদাত হোসেন শুভ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লালপাহাড়ের বয়স ১২ বছর। তার সঙ্গী স্ত্রী জলহস্তি জলপরীর বয়স ৯ বছর এবং ওজন ৯০০ কেজি করে।

এর বিনমিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে আমরা দুই বছর বয়সি এক জোড়া বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানাকে দিই। এ কাজে মধ্যস্ততা করে মৎস্য ও প্রাণীস¤পদ মন্ত্রণালয়। কারণ ঢাকা ও রংপুর চিড়িয়াখানা পরিচালনা করে মৎস্য ও প্রাণীস¤পদ মন্ত্রণালয়। আর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন।

আরও পড়ুন :  প্যানিক অ্যাটাকে আক্রান্ত মুন্নী সাহা, ছাড়া পেলেন শর্তসাপেক্ষে

শুভ জানান, ২০২১ সালের শেষদিকে মন্ত্রণালয়ের কাছে জলহস্তি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও তৎকালীন জেলা প্রশাসক মো. মোমিনুর রহমান। এ প্রক্রিয়া অগ্রসর না হওয়ায় ২০২২ সালের ২২ আগস্ট আবারও চিঠি দেওয়া হয়।

এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় বিনিময় হিসেবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা থেকে রংপুরের জন্য এক জোড়া বাঘ এবং ঢাকার জন্য এক জোড়া সাম্বার হরিণ ও এক জোড়া ইন্দোনেশিয়ান আয়াম সিয়ামি মোরগ দেওয়ার প্রস্তাব করেন। পাশাপাশি রংপুর চিড়িয়াখানায় বাঘ পাঠানো এবং জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে জলহস্তি চট্টগ্রামে আনার যাবতীয় ব্যয়ভার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার কাছে বহন করার শর্ত দেওয়া হয়।

গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ রংপুরে বাঘ পাঠানো এবং ঢাকা থেকে জলহস্তি আনার ব্যয়ভার বহন করার শর্ত মেনে নিয়ে চিঠি দেয়। অন্য প্রাণীগুলো চট্টগ্রামে পর্যাপ্ত না থাকায় সেগুলো প্রজনন সাপেক্ষে পরবর্তী দেওয়ার আশ্বাস দেয়া হয় ওই চিঠিতে। এরপর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জলহস্তি দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায় মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন :  জামিন পেলেও মুক্তি মিলছে না বাবুল আক্তারের

যার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নতুন জলহস্তিসহ প্রাণীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬২০-এ। এই চিড়িয়াখানায় সর্বমোট ৬৮ প্রজাতির পশুপাখি রয়েছে। এর মধ্যে ৩০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৪ প্রজাতির পাখি ও চার প্রজাতির সরীসৃপ আছে।

ডা. শাহাদাৎ হোসেন শুভ আরও বলেন, এর আগে চলতি বছর ১৬ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয় এক জোড়া সিংহ। একই সময় আনা হয় চার জোড়া ওয়াইল্ড বিস্ট। দরপত্রের মাধ্যমে এক কোটি ৬৯ লাখ টাকায় সিংহ, ম্যাকাও, ওয়াইল্ড বিস্ট, ক্যাঙ্গারু, লামা আমদানি করা হয়। ফ্যালকন ট্রেডার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রাণীগুলো আমদানি করে।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামের সরকারি স্কুলে আসনের ৬২ গুণ ভর্তির আবেদন!

সূত্রমতে, চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দাদের জন্য এ চিড়িয়াখানা সবচেয়ে বড় বিনোদনের স্থান। এখানে পশুপাখি ছাড়াও আছে শিশুদের জন্য আলাদা জোন। যেখানে দোলনাসহ রয়েছে নানা রাইড। চিড়িয়াখানায় প্রবেশ ফি নেওয়া হয় জনপ্রতি ৭০ টাকা। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার দর্শনার্থী টিকিট নিয়ে প্রবেশ করেন। তবে সরকারি ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে ছয় থেকে সাত হাজার।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই চিড়িয়াখানায় বাঘ, সিংহ ছাড়াও রয়েছে জেব্রা, ভাল্লুক, হরিণ (চিত্রা, সাম্বার, মায়া), উল্লুক, বানর, মেছো বিড়াল, চিতা বিড়াল, অজগর, বাঘডাসা, উটপাখি, ইমু পাখি, গয়াল, কুমির, ময়ূর, ঘোড়া, বক, টিয়াসহ ৬৮ প্রজাতির ৬২০টি পশুপাখি। সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কারণে চিড়িয়াখানা ২০১৯ সালে দলগতভাবে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক অর্জন করে।

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page