প্রায় আড়াই বছর পর কারামুক্ত হলেন শিশুবক্তা খ্যাত মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী। শনিবার (৫ নভেম্বর) রাতে তিনি কাশিমপুর কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন বলে জানান কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার আমিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর তা যাচাই-বাছাই শেষে রাত ৮টার দিকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৭ এপ্রিল নেত্রকোনায় নিজ বাড়ি থেকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার কাছ থেকে চারটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়। মামলার এজাহারে রফিকুলের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় ইতোমধ্যে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এতে মামলাটির বিচারকাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। এর বাইরেও তার বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
রফিকুল ইসলামের কণ্ঠ, শারীরিক গঠন ও মুখাবয়বের কারণে তাকে কম বয়সী ছেলেদের মতো মনে হয়। তার ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, ১৯৯৪ সালে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় তার জন্ম। সে হিসেবে তার বর্তমান বয়স ২৯ বছর।
তিনি নেত্রকোনার একটি মাদরাসায় হিফজুল কোরআন পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় একটি মাদরাসায় আসেন। সেখানে কয়েক বছর পড়াশোনা শেষে তিনি চলে চলে যান গাজীপুরের কোনাবাড়িতে একটি মাদরাসায়। সেখানে কিছুদিন পড়াশোনা করার পর ঢাকার বারিধারা এলাকায় অবস্থিত একটি মাদরাসা থেকে তিনি দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমানের) পাস করেন।
রফিকুল ইসলামের নামের সঙ্গে মাদানী টাইটেল নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। নামের শেষে মাদানী টাইটেল লাগানোর ঘটনায় তাকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন হেফাজতে ইসলামের মদিনা শাখার আমির ও সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্য। তার নামও রফিকুল ইসলাম। লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, সৌদি আরবে মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা না করেও ‘মাদানী’ উপাধি ব্যবহার করছেন রফিকুল ইসলাম। লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর পরে একটি অনুষ্ঠানে রফিকুল ইসলাম বলেন, মদিনা থেকে পড়াশোনা করলেই যে শুধু ‘মাদানী’ উপাধি ব্যবহার করা যাবে বিষয়টি সে রকম নয়।
ঢাকার বারিধারা এলাকায় অবস্থিত জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স সমমানের) ডিগ্রি লাভ করায় তিনি নামের শেষে ‘মাদানী’ টাইটেল যুক্ত করেন বলে জানান।
ঈশান/মখ/মউ