চট্টগ্রাম মহানগরীর বুকে সবুজে মোড়ানো সিআরবি সবার নজর কাড়ে। তবে গত ১৫ বছর ধরে এই সিআরবি ছিল চেতনাবাদি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীদের দখলে। যারা ১লা বৈশাখ, খ্রীষ্টমাস ডেসহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালনে আয়োজন করতো নানা অনুষ্ঠান। যেখানে চলতো শুধু বেহায়পনা।
আর সেই চেতনার সিআরবিতে হয়ে গেলো ব্যতিক্রম আয়োজন কাওয়ালী জলসা। যেখানে প্রকৃতির সাথে হাজার হাজার প্রকৃতি প্রেমিদেরও মন ছুঁয়ে গেছে কাওয়ালীর সুরে। সৃষ্টি হল অন্যরকম এক আবহ-আবেশ।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সিআরবিতে অনুষ্ঠিত হলো এই কাওয়ালী জলসা। যেখানে ছিল হাজার হাজার দর্শক-স্রোতার উপস্থিতি। মাহে রবিউল আউয়াল উদযাপন উপলক্ষে শানে মোস্তফা (স.) ও কাওয়ালী জলসার আয়োজন করেছে চট্টগ্রামের পারাবার সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ।
মঞ্চে চট্টগ্রামের ইসলামী ঘরনার শিল্পগোষ্ঠী পারাবার সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ ছাড়াও একের পর এক কাওয়ালী গান পরিবেশন করেছে পানজেরী, দুর্নিবার ও দর্পণের শিল্পীরা। শিল্পীদের পরিবেশনায় যেন অন্য এক রূপ ধারণ করে সুবজে ঘেরা সিআরবি।
জানতে চাইলে পারাবার সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইস্রাফিল হোসাইন এ প্রসঙ্গে বলেন, সংস্কৃতির নামে অপসংস্কৃতির চর্চা হতো প্রকৃতির মায়াময় সিআরবিতে। চট্টগ্রামের আপামর জনসাধারণ তো দূরের কথা, প্রকৃতিও চাইত না, তার বুকে এমন অপসংস্কৃতি হোক।
যা হোক দীর্ঘ সময় পর হলেও সিআরবি থেকে সেই চেতনার ভুত তাড়াতে পেরেছে চট্টগ্রামবাসী। পরিবেশন করতে পেরেছি ইসলামী সঙ্গীত। কাওয়ালী জলসার এই আয়োজন চট্টগ্রামবাসীর মনে দাগ কেটেছে। দর্শকদের দাবি ছিল এই আয়োজন যেন আমরা অব্যাহত রাখি। চেষ্টা করব আমরা দর্শকদের মনের সেই আকাঙ্খা পূরণ করতে।
দর্শক-স্রোতারা বলেন, কাওয়ালী গান আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই গানের আসরে স্নিগ্ধতা বিরাজ করছে। চারদিকে সবুজ গাছ-গাছালি তার মাঝে সুর এক মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। আগে চেতনার নামে অপসংস্কৃতির ধারায় কলুষিত ছিল এই সিআরবি। তাদের বেহায়পণায় কোন সুধিজনের আসা সম্ভব হতো না এই সিআরবিতে।
আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতায় সিআরবি থেকে চেতনার সেই ভুতদের তাড়াতে পেরেছি। দ্বিতীয় স্বাধীনতায় যারা শহীদ হয়েছেন তাদের ঋণ আমরা শোধ করতে পারবো না। অন্তত ভালোবাসা দিয়ে, দেশীয় সংস্কৃতি, আমাদের বিশ্বাসের সংস্কৃতি, বাংলাদেশের মানুষের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে আমরা সেই ঋণ শোধ করতে চাই।