বুধবার- ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪

মজুদ সর্বনিম্ন পর্যায়ে

ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ, বিপর্যয় যে কোনো সময়

ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ, বিপর্যয় যে কোনো সময়
print news

“ডলার সংকটে আমদানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আর মজুদ সংকটের এই সময়ে ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ থাকা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। কবে নাগাদ উৎপাদন শুরু হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না ইআরএল। এতে যে কোনো সময় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।”

চাহিদার তুলনায় মজুদ সর্বনিম্ন পর্যায়ে আছে, তবুও জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় অবস্থিত দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে (ইআরএল)। এতে যেকোনো সময় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে জেট ফুয়েল সরবরাহে। এমনকি আপদকালীন সময়ে বিকল্প উৎস থেকে জেট ফুয়েল পাওয়া নিয়ে দেখা দিতে পারে চরম অনিশ্চয়তা।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে এমন তথ্য জানিয়েছেন বিমানবন্দরগুলোতে জেট ফুয়েল সরবরাহকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন্স) আসিফ মালিক।

তিনি বলেন, গত বছরের শেষ সময় থেকে চলতি বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জেট ফুয়েলের মজুদ সংকট ছিল। অথচ এক বছরের ব্যবধানে জেট ফুয়েলের দৈনিক চাহিদা বেড়েছে ৩০০ টন। তাই আমদানির পাশাপাশি বিকল্প উৎস থেকে জেট ফুয়েলের সরবরাহ পাওয়া গেলে ভালো। তাতে অন্তত আপদকালীন সময় কিছুটা সহায়তা মিলবে।

আরও পড়ুন :  সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাবে শতকোটি টাকা!

তিনি বলেন, ডলার সংকটে আমদানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আর মজুদ সংকটের এই সময়ে ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ থাকা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন। কবে নাগাদ উৎপাদন শুরু হবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না ইআরএল। এতে যে কোনো সময় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইআরএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. লোকমান বলেন, ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। বিপিসি থেকে নির্দেশনা পেলে আমরা জেট ফুয়েল উৎপাদন শুরু করি। কিন্তু সে ধরনের কোনো নির্দেশনা আমরা এখনও পাইনি। তাই জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। ইআরএলে প্রতিদিন ২০০ টন করে উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। যা মাসে ৬০ হাজার টন।

ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ, বিপর্যয় যে কোনো সময়

ইআরএলের অপারেশন্স বিভাগের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, বিদেশ থেকে আমদানি করা অপরিশোধিত জ্বালানি তেল (ক্রুড) পরিশোধন করে কয়েক ধরনের জ্বালানি তেল উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন এবং ফার্নেস অয়েলের পাশাপাশি জেট ফুয়েল বা জেট এ-১ উৎপাদন করা যায়। বিপিসি থেকে নির্দেশনা থাকলে জেট ফুয়েল উৎপাদন শুরু করা হয়। অন্যথায় জেট ফুয়েল উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়। প্রতি সপ্তাহে ক্রুড পরিশোধন করে ৮০০ থেকে ১৪০০ টন জেট ফুয়েল উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। যা বর্তমান দৈনিক চাহিদা থেকে অনেক কম। তবে আপদকালীন সময়ে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার মতো যথেষ্ট উৎপাদন সক্ষমতা বলা যায়।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামের সরকারি স্কুলে আসনের ৬২ গুণ ভর্তির আবেদন!

সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, প্রায় এক মাস আগে সারা দেশের ডিপোগুলোয় বিমানের জ্বালানি জেট ফুয়েল সংকট দেখা দেয়। এক পর্যায়ে জেট ফুয়েলের মজুদ নেমে আসে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী দেশে এক মাসের মজুদ থাকার কথা। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে জেট ফুয়েল মজুদ ছিল ৩৩ হাজার টন। যা দিয়ে বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী চলবে ২০ দিনের মতো। তবে জেট ফুয়েলবাহী আরও দুটি ট্যাঙ্কার আগামী সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দরে ভেড়ার শিডিউল রয়েছে। এরপর বর্তমান মজুদ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন বিপিসির কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন :  শান্তিচুক্তির ২৭ বছরেও পাহাড়ে অশান্তি, চুক্তির মুলে নোবেল পুরুস্কারের লোভ

বিপিসির কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছর হজ মৌসুমে দেশের বিমানবন্দরগুলোতে জেট ফুয়েলের চাহিদা বেড়ে যায়। নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি হজযাত্রী বহনকারী ফ্লাইট পরিচালনা বেশি হওয়ায় চাহিদা বাড়ে। জেট ফুয়েলের মজুদ সংকট এড়াতে ওই সময় ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। বিপিসির অপারেশন্স বিভাগ থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর কেবল জেট ফুয়েল উৎপাদন শুরু করে ইআরএল। তবে গত কয়েক বছর ধরে জেট ফুয়েল উৎপাদনের কোনো নির্দেশনা দিতে হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (বিপণন) অনুপম বড়ুয়া বলেন, জেট ফুয়েল পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। তাই বিকল্প উৎস থেকে সরবরাহ না হলেও কোনো সমস্যা হবে না।

উৎপাদন সক্ষমতা থাকার পরও বিকল্প উৎস হিসেবে ইআরএলে জেট ফুয়েল উৎপাদন হচ্ছে না কেন এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ৩৫ হাজার টন জেট ফুয়েল মজুদ আছে। এই মুহূর্তে কোনো সংকট নেই। প্রয়োজন হলে তখন দেখা যাবে।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page