চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের ইছানগরে এস আলম সুগার মিলের গুদামের আগুন নিভেছে প্রায় ৬৮ ঘণ্টা পর। যদিও গুদামের ভেতর এখনো ঘুষে-ঘুষে জ্বলছে আগুন। যা পুরোপুরি নিভাতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
বৃহ¯পতিবার (৭ মার্চ) এ তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। বৃহ¯পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু এখনো কিছু কিছু জায়গায় হালকা আগুন দেখা যাচ্ছে। আশা করছি বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে পুরোপুরি আগুন নির্বাপন করতে সক্ষম হবো। তাছাড়া কারখানাটিতে এক লাখ মেট্রিক টন চিনির কাঁচামাল মজুত ছিল। আমরা তার ৮০ শতাংশ রক্ষা করতে পেরেছি।
ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক আরও বলেন, ৬৮ ঘণ্টা পর্যন্ত আগুন নির্বাপণের কাজ করা হয়েছে। আগুন দেরিতে নিয়ন্ত্রণে আসার কারণ হলো, চিনির কাঁচামালগুলো দাহ্য পদার্থ। পানি দেওয়ার পরও আবার জ্বলে ওঠে। এখন আমরা পুরোপুরি নির্বাপণের পর্যায়ে রয়েছি।
তিনি বলেন, আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক রেজাউল করিমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
গত সোমবার (৪ মার্চ) বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের এই চিনিকলের এক নম্বর গুদামে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টার দিকে খবর পেয়ে শুরুতে দুটি ইউনিট, পরে আরও ৫টি ইউনিটসহ মোট ৭টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
তবু আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় যুক্ত হয় আরো ৭টি ইউনিট। সব মিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৪ ইউনিট কাজ করে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। যুক্ত হন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরাও।
এস আলম গ্রুপের হেড অব স্টেট মোস্তান বিল্লাহ আদিল বলেন, আগুন এখন প্রায় নির্বাপণের পথে। এ আগুন নিয়ন্ত্রণ ও নির্বাপণের জন্য যে সব সংস্থা সহযোগিতা করেছেন সবাইকে আমরা ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যদিও সর্বশেষ নির্বাপণের কাজটি করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল) মো. আকতার হোসেন বলেন, আমাদের কারখানায় ১ লাখ ১৬ হাজার মেট্রিক টন র-সুগার ছিল। যার ৮০ শতাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যা আগামীতে ল্যাব পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যবহার করা যাবে। আমাদের কিছু মেড সুগার রয়েছে, যা আজ থেকেই বাজারে ছাড়া হবে।
আকতার হোসেন বলেন, আগামি শনিবার থেকে সুগার মিলে আবার উৎপাদনে যাওয়া সম্ভব হবে। সুতরাং বাজারে এর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে না। আমাদের এ সুগার মিলে আগুন লাগার কারণে ফায়ার সার্ভিসের ছিটানো কিছু পানি চলে যায় কর্ণফুলীতে। এ ধরনের বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবারই ক্ষতি হয়। এটি সবারই মেনে নিতে হবে।