জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগের পর মুক্তিপণে ছাড়া পেয়েছেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক। শনিবার রাতে অক্ষত অবস্থায় নাবিকরা জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার খবরে তাদের পরিবারে চলছে ঈদের আনন্দ।
এর আগে গত এক মাস ধরে জিম্মিদশা থেকে নাবিকদের মুক্তি মিলবে কি না, নাবিকরা সবাই নিরাপদে আছে কি না তা নিয়ে অজানা আতঙ্কে ছিল পরিবারগুলো।
মুক্তির ঘটনায় গণমাধ্যমের সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে গিয়ে কেউ হয়ে পড়েছেন আবেগাপ্লুত। কেউ জানিয়েছেন স্বস্তির কথা। এর মধ্যে জাহাজটির প্রধান কর্মকর্তা আতিকুল্লাহ খাঁনের মা শাহনুর আক্তার বলেন, ঈদের তিন দিন পরেই যেন ঈদ এসেছে আমাদের ঘরে। আমার ছেলেসহ সবাই অক্ষত অবস্থায় মুক্তি পেয়েছে- এই খবর শোনার পর ভালো লাগছে। তারা এখন নিরাপদে দেশে ফিরলে টেনশন থেকে মুক্তি পাবো।
জিম্মি করার ৩১ দিন পর এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের ২৩ নাবিকের মুক্তির খবরে নাবিক মোহাম্মদ নুর উদ্দিনের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, এই দিনগুলো কীভাবে কেটেছে জানি না। আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে ঈদের আনন্দের দিন ছিল বিষাদে ভরা। আজ যেন আমাদের খুশির ঈদ। কেএসআরএম গ্রুপের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। তারা তাদের অঙ্গীকার রক্ষা করেছে।
আরেক নাবিক আইয়ুব খানের ভাই আওরঙ্গজেব রাব্বী দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভাইয়ের জন্য দুশ্চিন্তায় এক মাস আমাদের বিষাদের দিন কেটেছে। আজ মনে হচ্ছে সত্যিকারের ঈদ এসেছে। আমরা খুবই খুশি।
জাহাজটির মালিকপক্ষ অর্থাৎ কেএসআরএস কর্তৃপক্ষদের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ নাবিকের মধ্যে মাস্টার রাশেদ মোহাম্মদ আব্দুর, চিফ অফিসারখান মোহাম্মদ আতিক উল্লাহ, সেকেন্ড অফিসার চৌধুরী মাজহারুল ইসলাম, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ তানভীর, ফায়ারম্যান শাকিল মোশাররফ হোসেন, চিফ কুক ইসলাম মো. শফিকুল, জেনারেল স্টুয়ার্ড উদ্দিন মোহাম্মদ নূর, রহমান মো. আসিফুর, হোসাইন মো. সাজ্জাদ, ওয়লার হক আইনুল, শামসুদ্দিন মোহাম্মদের বাড়ি চট্টগ্রামে।
লক্ষ্মীপুর ও ফেনী বাড়ি ইঞ্জিন ক্যাডেট খান আইয়ুব, ইলেকট্রিশিয়ান উল্লাহ ও ইব্রাহিম খলিল। নোয়াখালীর নাবিক হক মোহাম্মদ আনোয়ারুল ও ফাইটার আহমেদ মোহাম্মদ সালেহ।
খুলনার সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার ইসলাম মো. তৌফিকুল ফরিদপুরের থার্ড অফিসার ইসলাম মো. তারেকুল, টাঙ্গাইলের ডেক ক্যাডেট হোসাইন মো. সাব্বির। নওগাঁর চিফ ইঞ্জিনিয়ার শাহিদুজ্জামান এ এস এম।
নেত্রকোণার থার্ড ইঞ্জিনিয়ার উদ্দিন মো. রোকন ও নাটোরের অর্ডিনারি সি-ম্যান মোহাম্মদ জয়। সিরাজগঞ্জের হক মো. নাজমুল ও বরিশালের হোসাইন মো. আলী।