বুধবার- ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪

ব্যাংকের ৯২ কোটি টাকা আত্নসাত

দুদকের মামলায় চট্টগ্রামে শিল্পপতির নজিরবিহীন সাজা

দুদকের মামলায় চট্টগ্রামে শিল্পপতির নজিরবিহীন সাজা
print news

স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির নামে অগ্রণী ব্যাংকের প্রায় ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রামে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় সিলভিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির মালিক মুজিবর রহমান মিলনকে নজিরবিহীন সাজা দিয়েছেন আদালত। মামলার রায়ে আদালত তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ১০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এছাড়া পৃথক ধারায় আরও ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদ এ রায় দিয়েছেন বলে জানান দুদকের পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু। তিনি জানান, ১০ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় আসামি মজিবুর রহমান মিলনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়াও দণ্ডবিধির ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। আদালত পলাতক মজিবুর রহমান মিলনের বিরুদ্ধে সাজামূলে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বলে জানান দুদক পিপি।

আরও পড়ুন :  বৈদেশিক মুদ্রাসহ চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে যাত্রী আটক

মামলার নথিপত্র পর্যালোচনায় জানা যায়, স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির জন্য ২০০৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর অগ্রণী ব্যাংকের লালদিঘীর পাড় শাখা থেকে মজিবুর রহমান মিলনের নামে ৪৫ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করা হয়। ২০১০ সালের ২৬ এপ্রিল সেই ঋণসীমা ৮৯ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। ওই বছরের ৭ মে মজিবুর ৪০ কোটি টাকার ঋণপত্র খোলেন।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামের সরকারি স্কুলে আসনের ৬২ গুণ ভর্তির আবেদন!

মজিবুর কোরিয়া থেকে ১২ হাজার ৪৩৩ মেট্রিকটনের একটি স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি করেন। যা ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে খালাস হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই জাহাজের দাম হিসেবে ৪৮ কোটি ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৫১৪ টাকাসহ তিন দফায় ৮২ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ৪৪ টাকা নিট ঋণ মজিবুরের প্রতিষ্ঠানকে পরিশোধ করে।

কিছু অর্থ পরিশোধের পর ২০১৭ সালের ৩০ মে পর্যন্ত মজিবুরের কাছ থেকে ব্যাংকের পাওনা দাঁড়ায় ৯১ কোটি ৯২ লাখ ৮৪ হাজার ৩৯২ টাকা। মজিবুর অর্থ পরিশোধ না করে লাপাত্তা হয়ে যান। এমনকি তার পরিবারের সদস্যরাও গা-ঢাকা দেন।

আরও পড়ুন :  সেনাবাহিনীকে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত করার প্রত্যয় সেনাপ্রধানের

এ বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অভিযোগের পর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাফর আহমেদ বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২৪ মে নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম ২০২১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

২০২২ সালের ২৮ আগস্ট আসামির বিরুদ্ধে দুদক আইনের সিডিউলভুক্ত অপরাধ দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ৪২০ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। দণ্ডিত শিল্পপতি মজিবুর রহমান মিলন জাহাজ ভাঙা কারখানা মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রির মালিক ও সিলভিয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান। তার বাড়ি ফেনী জেলায়। বাসা চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে। মজিবুর রহমান বর্তমানে সিঙ্গাপুরে পলাতক রয়েছেন।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page