১৪ বছর পর অবশেষে শুরু হচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আইকনি নগর ভবনের নির্মাণ কাজ। ১৪ বছর আগে এই ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল।
সোমবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর আন্দরকিল্লায় নতুন আইকনিক নগর ভবন নির্মাণের কাজের উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
উদ্বোধনের সময় মেয়র বলেন, পুরাতন নগর ভবনের স্থানে পার্শ্ববর্তী আরও দু’টি ভবনের স্থান সংযুক্ত করে এ আইকনিক নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। তিনটি বেইজমেন্টসহ পুরো নগর ভবন হবে ২১ তলা। এ ভবনের প্রথম ধাপের উদ্বোধন হলো আজ।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য ২৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম ধাপের কাজের অংশ হিসেবে পাঁচ থেকে ছয় তলা আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে শেষ করে টাইগারপাস থেকে আন্দরকিল্লায় চলে আসা। বাকি অংশ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, স্থায়ী নগর ভবন না থাকায় বিদেশি অতিথিরা এলে আমাদের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো। নাগরিকদেরও সেবা প্রদান বিঘ্নিত হতো। সেজন্য নিজস্ব ফান্ডে নগর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। এ ভবনে নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দে সেবা নিতে পারবেন। এ ছাড়া, ভবনের একটি ফ্লোরে চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরতে গড়ে তোলা হবে জাদুঘর।
চসিকের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মোট ৫৩ দশমিক ৪৫ কাঠা জায়গায় নগর ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রণয়ন নামে একটি কনসালটেন্ট ফার্ম এ ভবনের নকশা করেছে। ভবনের উপরে থাকবে সিটি ক্লক। ভবনের তিন পাশে সাজানো বাগান থাকবে। নির্মাণ করা হবে ফোয়ারা। থাকবে মাল্টিপারপাস, কনফারেন্স ও ব্যাংকুয়েট হল। তবে পুরো নগর ভবন নির্মাণ করা হবে ধাপে ধাপে। শুরুতে বেইজমেন্টসহ তিনটি ফ্লোর নির্মাণ করা হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, হাসান মুরাদ বিপ্লব, শৈবাল দাশ সুমন, মো. ইলিয়াছ, আবদুস সালাম মাসুম, আতাউল্লা চৌধুরী, রুমকি সেনগুপ্ত ও মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম।
২০১০ সালের ১১ মার্চ নগর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এরপর তিনি নির্বাচনে পরাজিত হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
এর পর ২০১১ সালে সাবেক মেয়র মনজুর আলম ৪৯ কোটি টাকায় ২০ তলা নগর ভবন নির্মাণে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেন। তখন চসিককে নিজস্ব অর্থায়নে নগর ভবন নির্মাণ করতে বলা হয়। এরপর অর্থাভাবসহ নানা জটিলতায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
তার পর আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র থাকাকালে কয়েকবার সংশোধনের পর নগর ভবন নির্মাণে ২০২ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়। সেটা এখনো একনেক এ অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।