
চট্টগ্রামের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ভারতের আসাম রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (উলফা)-এর সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রথম রায়ে তার মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু বহুল আলোচিত আসামি পরেশ বড়ুয়াকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পরেশ বড়ুয়ার অবস্থান কোথায় এবং তিনি কীভাবে আছেন তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর কাছে। তবে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ধারণা করছে, উলফা নেতা পরেশ বড়ুয়া বর্তমানে তিব্বত অঞ্চলে বা চীনের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন।
গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের মতে, পরেশ বড়ুয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সেভাবেই কখনোই অবস্থান করেননি। তার বেশির ভাগ সময় কেটেছে নিজ জন্মভূমি আসাম, মায়ানমার ও চীনের সীমান্তবর্তী এলাকায়। চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের পর উলফার প্রতিষ্ঠাতা পরেশ বড়ুয়াকে আটকের জন্য সব ধরনের খোঁজখবর করা হয়। কিন্তু তার অবস্থান সম্পর্কে না জানায় অধরা রয়ে গেছেন তিনি।
২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় পরেশ বড়ুয়া মারা গেছেন বলে তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে সে দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম খবর প্রকাশ করলেও পরবর্তী সময়ে সেটা সঠিক নয় বলে জানা যায়। সে সময় উলফার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া নিজেই গণমাধ্যমকে বিষয়টি পরিষ্কার করেছিলেন। ওই সময়ের পর থেকে পরেশ বড়ুয়া মায়ানমারে অবস্থান করেন।
কথিত আছে সেখানে তিনি আরাকান আর্মির পক্ষে সামরিক উপদেষ্টার ভূমিকা পালন করেন। পরে মায়ানমার জান্তা বাহিনী আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করলে পরেশ বড়ুয়া ২০২২ সাল বা ২০২৩ সালের শুরুর দিকে মায়ানমার ছেড়ে তিব্বত বা চীন সীমান্তে আশ্রয় নেন।
পরেশ বড়ুয়া পরেশ অসম নামেও পরিচিত। তিনি ভারত থেকে আসামকে স্বাধীন করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে সশস্ত্র সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান। ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয় পাঁচ ব্যক্তিকে। সেখান থেকে এ অস্ত্র চোরাচালানে পরেশ বড়ুয়ার জড়িত থাকার তথ্য বেরিয়ে আসে।
এই ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন খালাস পেয়েছেন গত ১৮ ডিসেম্বর বুধবার।