বৃহস্পতিবার- ২৭ মার্চ, ২০২৫

রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস

রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস
print news

রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূর্ণ হয়নি দেশের শীর্ষ রাজস্ব আদায়কারী শুল্ক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ সময়কালে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায় দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৯০৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

যদিও আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪১ হাজার ৫২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এর মানে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৫ হাজার ৬২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। ডিসেম্বরেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৯২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।

এর কারণ হিসেবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কথা উল্লেখ করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পণ্য শুল্কায়ন ও খালাস প্রক্রিয়া পুরোদমে চালু হয়নি, যার ফলে রাজস্ব আদায়ে ব্যাঘাত ঘটেছে।

তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে ২ হাজার ৩৮২ কোটি ১০ লাখ টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। এতে গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ছয় মাসের তুলনায় ৭ দশমিক ১১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির পরিমাণ ধরে রাখা গেলে, রাজস্ব আদায় আরও বাড়বে। এছাড়া রাজস্ব আদায়ে গতি আনতে কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা আরও কঠোর তৎপরতা অব্যাহত রাখবেন বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের মতে, দেশে ডলারসংকট ও বিলাসী পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করা হলেও চলতি অর্থবছরে তা অনেকাংশে কমেছে। এর ফলে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার তৎপরতা বৃদ্ধি ও মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি কমানোর জন্য কঠোর পদক্ষেপের ফলেও রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পায়। খালাস প্রক্রিয়াতেও রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ কমে গেছে।

কাস্টম হাউসের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৩ হাজার ৪৩২ কোটি টাকা। বছরের প্রথম ছয় মাসে আদায় লক্ষ্য ছিল ৪১ হাজার ৫২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, তবে তা পূর্ণ হয়নি।

জুলাইয়ে ৫ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা লক্ষ্য ছিল, অথচ আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৩১১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগস্টে ৬ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৪২ কোটি ১১ লাখ টাকা।

সেপ্টেম্বরে লক্ষ্য ছিল ৭ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অক্টোবরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয়েছে ৬ হাজার ৬১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।

নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকা, অথচ আদায় হয় ৫ হাজার ২৫৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ডিসেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। কিন্তু আদায় হয় ৫ হাজার ১০৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

ঈশান/বেবি/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page