
# সমালোচনার ঝড়
# পুলিশ বলছে অসাবধানতায় ভুলবশত হয়ে গেছে,
# প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেন পুলিশ কমিশনার
চট্টগ্রাম মহানগরীতে চার বছরের এক শিশুকে অপহরণের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাত বছরের আরেক শিশু ও তাদের মাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদলত শিশুটিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) এবং তার মাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষ বিষয়টি জানার পর রবিবার (৭ ডিসেম্বর) আদালতে শিশুটির জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করেন। তবে এ ঘটনায় চট্টগ্রাম জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মফিজুল হক ভূঁইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, শিশু আইন অনুযায়ী নয় বছরের কম বয়সী কোনও শিশুকে আসামি করা, গ্রেফতার বা আটক করার কোনো সুযোগ নেই।
তবুও নগরীর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ এ নিয়ম অমান্য করে ব্যবস্থা নেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আদালতে শিশুটিকে আনা হলেও এজলাসে হাজির করা হয়নি। বিচারকের সই করা অন্তর্বর্তীকালীন পরোয়ানায় শিশুটিকে টঙ্গীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বিষয়টি জানার পর রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) আদালতে শিশুটির জামিনের আবেদন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক আদেশে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ হাসানুল ইসলাম উল্লেখ করেন, শিশু আইন ২০১৩-এর ৪৪ (১) ধারা মতে নয় বছরের কম বয়সী কোনও শিশুকে গ্রেফতার ও আটকের সুযোগ নেই। পাঁচলাইশ থানার মামলায় সাত বছরের শিশুটি বর্তমানে গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে রয়েছে। তাকে তার বাবার জিম্মায় মুক্তি দেওয়া হোক।
সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৩ এপৃল চট্টগ্রাম মহানগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় বসবাসরত আনোয়ারা বেগমের দুই সন্তানের মধ্যে বড় সন্তান অসুস্থ হলে সেদিন চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সঙ্গে নিয়ে যান তার চার বছরের ছোট সন্তান মো. রামিমকেও। কিন্তু রামিম সেখান থেকে হারিয়ে যায়।
এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মা আনোয়ারা বেগম। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও রামিমকে না পেয়ে ঘটনার সাত মাস পর গত শুক্রবার পাঁচলাইশ থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় পুলিশ সাত বছরের শিশুটিসহ তার মাকে আসামি করে।
জিডিকে মামলায় রুপান্তর করা এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ছেলে রামিমকে হাসপাতালের বারান্দা থেকে সাত বছরের ওই শিশু ও তার মা খেলার কথা বলে অপহরণ করে নিয়ে যান। মামলা হওয়ার পর ওইদিনই পাঁচলাইশ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক ষোলশহর এলাকা থেকে সাত বছরের শিশু ও তার মাকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের হাজির করা হলে শিশুটিকে গাজীপুরের টঙ্গীতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) এবং তার মাকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়ে দেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, বিষয়টি অসাবধানতায় ভুলবশত হয়ে গেছে। দেশের আইনে নয় বছরের নিচে কোনও শিশুর অপরাধকে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (গণমাধ্যম) আমিনুর রশিদ বলেন, বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। ভুলবশত হয়ে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।












































