সোমবার- ১২ মে, ২০২৫

চট্টগ্রামে এবার ৬ সন্তান জন্ম দিয়ে রেকর্ড গড়লেন কক্সবাজারের মরিয়ম

চট্টগ্রামে এবার ৬ সন্তান জন্ম দিয়ে রেকর্ড গড়লেন কক্সবাজারের মরিয়ম

ট্টগ্রামে এবার ৬ সন্তান জন্ম দিয়ে রেকর্ড গড়লেন কক্সবাজারের গৃহবধু মরিয়ম। এর মধ্যে পাঁচটি কন্যা ও একটি ছেলে সন্তান। শনিবার সন্ধ্যার পর চট্টগ্রাম মহানগরীর বেসরকারি ন্যাশনাল হসপিটালে এসব সন্তান প্রসব করেন তিনি।

এর আগে গত ২৭ এপৃল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ সন্তানের জন্ম দেন ফেনীর গৃহবধু নাহিদা আক্তার রিক্তা। তিনি প্রসব করেন তিন কন্যা ও দুই ছেলে সন্তান। দুই মা-ই স্বাভাবিক (নরমাল) ডেলিভারির মাধ্যমে এসব শিশুর জন্ম দেন।

এর মধ্যে আগের পাচ শিশু বেচে থাকলেও অবস্থা সংকটাপন্ন বলছেন চিকিৎসকরা। তবে শনিবার জন্ম নেওয়া ৬ শিশুর সকলেই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল হাসপাতালের গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন সুলতানা লুলু।

তিনি জানান, ছয় নবজাতকের মধ্যে একজন ছাড়া বাকিজনদের ওজন তুলনামূলকভাবে কম হলেও তারা ঝুঁকিমুক্ত। তাদের নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণ চলছে।

হাসপাতালের নিউনেটাল ইউনিট সূত্র জানায়, কক্সবাজার জেলার মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহবধু মরিয়ম চিকিৎসকদের সহায়তায় ছয় সন্তানের জন্ম দেন। যা সাধারণত সিজারিয়ান ডেলিভারির মাধ্যমেই হয়ে থাকে। তবে চিকিৎসকদের পূর্বপ্রস্তুতি, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার কারণে স্বাভাবিকভাবে এই ডেলিভারি স¤পন্ন হয়।

তিনি বলেন, ১৯ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় ওই মা লুলু ম্যাডামের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। তারপর থেকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। আমরা সম্ভাব্য জটিলতা আঁচ করতে পেরেছিলাম, তবে শেষমেশ স্বাভাবিকভাবে সফলভাবে ডেলিভারি করাতে পেরে গর্বিত।

জানতে চাইলে ন্যাশনাল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. কারিশমা সুলতানা বলেন, গত ৫ বছরে প্রতিমাসেই ন্যাশনাল হাসপাতালে আমার দেখা একসঙ্গে দুইটা থেকে তিনটা পর্যন্ত নবজাতক জন্মের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েকদিন আগে চমেক হাসপাতালে পাঁচ সন্তানের জন্মও হয়েছে। কিন্তু নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একসঙ্গে ছয় নবজাতকের জন্মের ঘটনা এবারই প্রথম। এটা রেকর্ড।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে চারবার সন্তান জন্ম দিয়েছেন গৃহবধু মরিয়ম। দ্বিতীয়বারের সময় একসঙ্গে চার সন্তানের ভ্রুণ গর্ভে ছিল। কিন্তু সেসময় ওই বাচ্চাগুলো পাঁচমাসের মাথায় নষ্ট হয়ে যায়। ওইসময় তিনি শারীরিক জটিলতায় ভুগে অনেক কষ্ট করেছেন বলেও আমাদের জানিয়েছেন। কয়েকবছর পর আবার আরেকটা বাচ্চা হয়। এইবার আবার গর্ভধারণ করলে আল্ট্রাতে পাঁচ সন্তানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরক্ষণে তারা ম্যাডামের তত্ত্বাবধানে চলে আসে।

রিপোর্ট অনুযায়ী আমরা জানতাম ৫ জন বেবি হবে কিন্তু ডেলিভারির সময় দেখলাম ছয় জন বাচ্চা। সাধারণত নরমাল ডেলিভারিতে ৪০ সপ্তাহের মতো সময় লাগে। যদি টুইন বেবি হয় তাও কমপক্ষে ৩৪ সপ্তাহ পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়। কিন্তু এই বাচ্চাগুলো একটু অপরিপূর্ণ। ৩০ সপ্তাহের মধ্যেই হয়ে গেছে। একসাথে এতো শিশু জন্মানো ঝুঁকিপূর্ণ।

প্রশ্নের জবাবে এ চিকিৎসক বলেন, ডেলিভারির সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ জন্য আমরা সবরকমের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। আমরা মাথায় রেখেছি কোনোভাবেই মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে দেওয়া যাবে না। ডোনার থেকে শুরু করে ডেলিভারির আগে-পরে সব ধরনের মেডিসিন সব পর্যাপ্ত রাখা ছিল। যাতে ইর্মাজেন্সি তৈরি হলে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

এর আগে গত ২৭ এপৃল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে একসঙ্গে ৫ সন্তান জন্ম দেন ফেনীর গৃহবধু নাহিদা আকতার রিক্তা। সন্তানদের দুইজন ছেলে ও তিনজন মেয়ে। তবে এদের মধ্যে এক শিশুর শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলেও চার শিশুর অবস্থা সংকটাপন্ন। তবে তারা এখনো বেচে আছে বলে জানান শিশুগুলোর জন্মদাতা পিতা প্রবাসি আশরাফুল আলম। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়ার ১০ নম্বর গোপাল ইউনিয়নের মজলিস বাড়ির বাসিন্দা।

এর আগে ২০২২ সালে ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চার সন্তান জন্ম দেন ফেনীর আরেক গৃহবধূ ফারজানা আক্তার (২৪)। তিনি ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের মধুগ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী। তাঁর স্বামী খাগড়াছড়ির রামগড় শহরের একজন মুদিদোকানি। পরে একে একে চার সন্তানের মৃত্যু ঘটে।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page