সোমবার- ২০ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিক্ষোভে পুলিশের টিয়ারশেল

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের বিক্ষোভে পুলিশের টিয়ারশেল

ট্টগ্রাম মহানগরের জামালখান-চেরাগি মোড়ে বৈষম্যবিরোধি আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভে বাধার মুখে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পুলিশ এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করে।

সোমবার (২৯ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আটক শিক্ষার্থীরা হলেন- বেসরকারি সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইমন, বাকলিয়া সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ছাত্র আজমাঈন করিম নিহাল, গাছবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী জুলহাজ হোসেন এবং চট্টগ্রাম আইন কলেজের শিক্ষার্থী মো. নজরুল ইমসলাম।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে বিবৃতি আদায় এবং আন্দোলনকারীদের গুম, খুন এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে ১৯৪ পোশাক কারখানা ভয়াবহ অগ্নিঝুঁকিতে

কিন্তু বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের শুরুতেই পুলিশের আক্রমণের মুখে পড়তে হয়। এতে আমাদের অন্তত ৮ জন শিক্ষার্থীকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বেলা ৩টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে আসার আগেই সেখানে সতর্ক অবস্থান নেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সমাবেশস্থলে আসতে না পেরে চেরাগি মোড়ে খন্ড খন্ডভাবে এসে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। এর কিছুক্ষণ পরেই চেরাগি মোড়ের অন্যপাশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরাও অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।

এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতি-তর্কাতর্কি ও ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ এ সময় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় পুলিশ সেখান থেকে কয়েকজনকে আটক করে। পরে আন্দোলনকারীরা কদম মোবারক শাহী জামে মসজিদের সামনে সড়ক অবরোধ করে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন। আটক শিক্ষার্থীদের ছাড়াতে আন্দোলনকারীরা পুলিশের প্রিজনভ্যান আটকানোর চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুন :  চট্টগ্রামে জাবেদ-ওয়াসিকাসহ ১৩৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এ সময় পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের আবারও হাতাহাতি-তর্কাতর্কি হয়। পরে তারা সড়কে বসে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুনরায় টিয়ারশেল ছুঁড়ে পুলিশ। পরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জেএমসেন হল হয়ে কুসুমকুমারী স্কুলের সামনে হয়ে চলে যান আন্দোলনকারীরা।

এর আগে সমাবেশ ঘিরে জামালখান-চেরাগির মোড়ে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত ফোর্স। এ বিষয়ে কোতোয়ালী থানার ওসি এস এম ওবায়দুল হক বলেন, শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে। আমরা সে স¤পর্কে অবগত ছিলাম। ফলে জামালখান এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। আটক সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কোন তথ্য দিতে পারেননি তিনি।

এছাড়া সোমবার (২৯ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিএনপির দূর্গ হিসেবে খ্যাত কাজীর দেউরি এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের জন্য জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা। সেখানেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি এসে ধাওয়া দেয় শিক্ষার্থীদের।

আরও পড়ুন :  মাশুল বাড়ায় বন্ধ প্রাইভেট ট্রেইলার, পণ্য পরিবহনে অচলাবস্থা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার কাজী তারেক আজিজ বলেন, সভা-সমাবেশ করলে পুলিশের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু তারা পুলিশ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। এছাড়া কারফিউ চলাকালীন সময়ে শিথিল থাকলেও কোনো সভা-সমাবেশ করা যায় না। এ অবস্থায় আইনভঙ্গ করে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করলেও পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে বিষয়টি মোকাবিলা করছে।

উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে গত ১৬ জুলাই থেকে সংঘর্ষে চট্টগ্রামে এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page