শনিবার- ১২ জুলাই, ২০২৫

ছেলের বিয়ে থেকে পালিয়েছে আ.লীগ নেতা জাহেদুল

বৈছাআ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

ছেলের বিয়ে থেকে পালিয়েছে আ.লীগ নেতা জাহেদুল

চিটাগাং ক্লাবে ছেলের বিয়েতে মাস্তি করছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ জাহেদুল হক। কিন্তু হঠাৎ শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে জাহেদুল হককে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। নিরূপায় হয়ে ক্লাবের পেছনের দরজা দিয়ে পালালেন জাহেদুল হক। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবি, জাহেদুল হক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি। ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে এক ছাত্রের চোখ হারানোর ঘটনায় সম্প্রতি দায়ের করা এক মামলার আসামিও তিনি। তবে এ সময় চিটাগাং ক্লাব কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। একপর্যায়ে লোকজন জড়ো করে তাদের ওপর হামলার চেষ্টাও করেছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শুক্রবার (৫ জুলাই) দিবাগত রাত ১১টার দিকে চিটাগাং ক্লাবের সামনে এই ঘটনা ঘটে। জাহেদুল হক বোয়ালখালী উপজেলার সদ্য সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের একজন পরিচালক। তার ছেলের বিয়েতে বিএনপি নেতা আবু সুফিয়ান ছাড়াও হাজির ছিলেন একজন বিচারকসহ সিএমপির অন্তত তিনজন উপ-কমিশনার।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা চট্টগ্রাম মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন বলেন, হত্যাসহ অন্তত ১২টি মামলার পলাতক আসামি হয়েও জাহেদুল হক দিব্যি চট্টগ্রাম ক্লাবে ছেলের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। আর তাকে গ্রেপ্তার না করা আইন ও ন্যায়বিচারের সঙ্গে তামাশা। একইসাথে চিটাগাং ক্লাব কর্তৃপক্ষের দূর্ব্যবহার জুলাই শহীদদের প্রতি রক্তচক্ষু প্রদর্শনের সামিল। চিটাগাং ক্লাবের বর্তমান চেয়ারম্যান শোভন এম শাহাবুদ্দিন রাজ। তিনিও আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খানের স্বামী।

 এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ওসি আব্দুল করিম বলেন, শুক্রবার দিনগত রাত ১২টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ক্লাবের ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় ক্লাবের বাইরে উপস্থিত ছাত্রজনতা ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা প্রতিটি গাড়ি চেক করতে শুরু করেন। সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও ক্লাবের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে ছিল। এ সময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা স্লোগান দিতে থাকেন, “অপরাধী ধামাচাপা নয়, বিচার চাই—বিচার চাই!।

ছাত্রদের দাবি, জাহেদুল হককে ক্লাবের ‘গেস্ট রুমে’ লুকিয়ে রাখা হয়েছে। পরে অভিযুক্ত জাহেদুল হক পুলিশের সহযোগিতা নিয়েই চিটাগাং ক্লাবের পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যান পুলিশের লোকদেখানো অভিযান শুরুর আগেই। চট্টগ্রাম আদালতের একজন বিচারকও সেই বিয়েতে অতিথি হয়ে গিয়েছিলেন। সিএমপির তিনজন উপ কমিশনারও বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন অতিথি হিসেবে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ মে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বোয়ালখালী উপজেলা থেকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন মোহাম্মদ জাহেদুল হক। গণআন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর তিনি সেই পদ হারান।

ঈশান/মখ/সুম

আরও পড়ুন

জনপ্রিয়

You cannot copy content of this page