
“শুধু ব্ল্যাক শামীম নয়, এমন আরও শতাধিক সন্ত্রাসীর একাধিক বাহিনী রয়েছে কাউন্সিলর ওয়াসিমের। যারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ পরিচয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে টেন্ডারবাজী, দখলবাজী, চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। এদের অনেকেই চিহ্নিত, আবার কেউ কেউ ঠিকাদার পরিচয়ে মুখোশ পড়া ভদ্রলোক সেজে নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে” -স্থানীয়দের ভাষ্য।
চট্টগ্রাম-১০ আসনে ভোটের দিন পিস্তল দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করা ব্ল্যাক শামীম চসিকের ১৩ নং পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ওয়াসিমের লোক। পুলিশ তাঁকে খুঁজছে গ্রেপ্তারের জন্য। কিন্তু স্থানীয়রা বলছেন, শামীম কাউন্সিলরের আশ্রয়ে রয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর খুলশি থানাধীন পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে বিজয়ী মহিউদ্দিন বাচ্চু এবং প্রতিদ্বন্ধি ফুলকপি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এম মনজুর আলমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় প্রকাশ্যে পিস্তল বের করে গুলি করতে দেখা যায় শামীম আজাদ ওরফে ব্ল্যাক শামীমকে। এতে শান্ত বড়ুয়া (৩০) ও মো. জামাল (৩২) নামে দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তারা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গুলি করার এই ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ফুলকপি প্রতীকের সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছিল। সংঘর্ষ চলাকালীন প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়তে দেখা যায় ব্ল্যাক শামীমকে। তিনি পাহাড়তলী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর পালিত চিহ্নিত সন্ত্রাসী।
“শামীম আজাদকে আমি চিনি। সে ছাত্রলীগ কর্মী। তবে আমার অনেক অনুসারী আছে। কে কোথায় কী করেছে, তা আমার পক্ষে খবর রাখা সম্ভব নয়। পাহাড়তলী কলেজের সামনে গোলাগুলির সময় আমি সেখানে ছিলাম না” -কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরীর ভাষ্য।
স্থানীয়রা জানান, শুধু ব্ল্যাক শামীম নয়, এমন আরও শতাধিক সন্ত্রাসীর একাধিক বাহিনী রয়েছে কাউন্সিলর ওয়াসিমের। যারা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ পরিচয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে টেন্ডারবাজী, দখলবাজী, চাঁদাবাজী ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। এদের অনেকেই চিহ্নিত, আবার কেউ কেউ ঠিকাদার পরিচয়ে মুখোশ পড়া ভদ্রলোক সেজে নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছে।
এমনকি কাউন্সিলর ওয়াসিমও এসব সন্ত্রাসী ব্যবহার করে জোরপূর্বক রেলের টেন্ডার হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতি এমন একটি টেন্ডারবাজীর ঘটনা দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর নজরেও এসেছে। দুদুক এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে চিঠি প্রেরণ করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শামীম আজাদকে আমি চিনি। সে ছাত্রলীগ কর্মী। তবে আমার অনেক অনুসারী আছে। কে কোথায় কী করেছে, তা আমার পক্ষে খবর রাখা সম্ভব নয়। পাহাড়তলী কলেজের সামনে গোলাগুলির সময় আমি সেখানে ছিলাম না।
খুলশী থানার ওসি নেয়ামত উল্লাহ বলেন, কেন্দ্রের বাইরে নৌকা ও ফুলকপি প্রতীকের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। এ সময় দুই জন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলি ছোড়া যুবক ব্ল্যাক শামীমকে খুঁজছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঈশান/খম/সুম