
বিবাহ বিচ্ছেদের দেড় মাসের মাথায় ফের এক হলেন আলোচিত ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান ও তার স্ত্রী সাবিকুন নাহার।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন সাবিকুন নাহার। সন্তানদের কথা ভেবে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে পোস্টে উল্লেখ করেছেন তিনি।
সাবিকুন নাহার লিখেছেন, ‘দুনিয়াটা ক্ষণস্থায়ী। পুরোদস্তুর ধোঁকা, নিখাঁদ এক প্রতারণা। কত দিনই আর বাঁচব আমরা এই দুনিয়ায়? অনন্ত পরকালের চুলচেরা হিসাব আর চিরস্থায়ী জান্নাতের সাফল্যই যে সব! সেই সাফল্যের ভিখারি হয়েই আজ কথাগুলো লিখছি। কে কী ভাববে? কে কী বলবে?’
বাচ্চারা বাবা-মাকে খোঁজে জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘কী হবে আর কী না হবে এসবেরও বিন্দুমাত্র পরোয়া নেই। প্রতিনিয়ত আয়িশা তার বাবাকে খোঁজে! বাবা যাব! বাবা গাড়ি! বাবা কই? শব্দগুলোর ওজন উঠানোর কোনো পরিমাপক মহাবিশ্বে নেই। উসমানও মাকে পাচ্ছে না। উসমানের সামনে অন্যরা তাদের মায়ের নিকট আম্মু বলে ছুটে যাচ্ছে। অন্যদিকে নির্লিপ্ত চাহনিতে উসমানের প্রশ্ন তার আম্মুর কাছে কখন নিয়ে যাবে?’
বিচ্ছেদ ও পূর্বের ঘটনা প্রসঙ্গে সাবিকুন নাহার লিখেছেন, ‘যা ঘটে গেছে তার অনিবার্য পরিণতি যে এটাই তা হয়তো আমরা জানতাম, তবে জানা আর প্রতিনিয়ত উপলব্ধি করা যে কখনোই এক নয়! ইলমুল ইয়াক্বিন আর হাক্কুল ইয়াক্বিনে আছে আকাশসম ফারাক। জানা বিষয়টি উপলব্ধি করেছি আমরা।’
তিনি লিখেছেন, ‘বেশাক আমাদের ভুল ছিল। কিছু ভুল বুঝেছি, বোঝানোও হয়েছে! উসমানের বাবার প্রতি প্রগাঢ় মুহাব্বাত থেকেই অস্থির হয়েছি, কিছু রাগ, জেদ ও সীমালঙ্ঘনও হয়ে গেছে! সাথে মানুষ ও জ্বীন শয়তান, বিচ্ছেদের জাদু কি না ছিল?’
সাবিকুন নাহার লিখেছেন, ‘হয়তো এভাবেই আমাদের ভাগ্য লেখা হয়েছিল। তাকদিরের কাছে তো অনেক বড়রাও অসহায় ছিলেন, যেমন গ্রহণের সময় নিরূপায় থাকে চাঁদের আলো। তাই বলে কি চাঁদ কস্মিনকালেও কলঙ্কিত? সে যে আজন্ম আমার চাঁদই ছিল! দুরাচার শয়তান সঠিক সময়ে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে বারবার! শুভ্র, স্বচ্ছ, সুন্দরে, চিন্তায় ইবলিসকে তাই ঠাঁই দিইনি আর। ফা লিল্লাহিল হামদ! অতঃপর… আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন।’
সবশেষে তিনি লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। উসমান ও আয়িশা তাদের বাবা-মাকে ফিরে পেয়েছে! আল্লাহুম্মা লাকাল হামদ।’
এর আগে গত ২১ অক্টোবর ফেসবুকে দেওয়া পৃথক স্ট্যাটাসে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন আবু ত্বহা ও তার স্ত্রী। তাদের মধ্যে চলমান পারিবারিক বিরোধের অবসান ঘটেছে বলেও জানান তারা।
সে সময় আবু ত্বহা তার ফেসবুক পোস্টে জানান, দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামের মাশওয়ারার ভিত্তিতে উভয়ের পারিবারিক বিষয়সমূহ শারিয়াহ অনুযায়ী সুন্দরভাবে সমাধান ও নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
তিনি লেখেন, মুরুব্বি ওলামায়ে কেরামের উপস্থিতিতে সাবিকুন নাহার ‘খুলা তালাক’ গ্রহণ করেন, যার মাধ্যমে তাদের বৈবাহিক সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটে। বিয়ের মোহরানা পূর্বেই পরিশোধ করা হয়েছিল, ফলে দেনা-পাওনা সংক্রান্ত কোনো জটিলতা অবশিষ্ট নেই।
অন্যদিকে সাবিকুন নাহার তার স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। সম্প্রতি আমার পারিবারিক যে ইস্যুটি সর্বসাধারণের সামনে এসেছে; ওলামায়ে কেরামের তত্ত্বাবধানে তার অত্যন্ত সুন্দর ও উত্তম মীমাংসা হয়েছে।’
আরও লেখেন, দীর্ঘ এক মানসিক চাপে থেকে, অবশেষে দায়িত্বশীল মহলের হস্তক্ষেপে তিনি একটি সমাধানে পৌঁছাতে পেরেছেন। পাশাপাশি নিজেও এই বিষয়ে আর কোনো বক্তব্য না দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং অন্যদেরও আলোচনায় না জড়ানোর অনুরোধ জানান।











































