বুধবার- ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মহসিন কলেজে দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ, হিট লিস্টে ২৫ শিক্ষার্থী

মহসিন কলেজে দুই শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে পুলিশে সোপর্দ, আতঙ্কে ২৫ শিক্ষার্থী

ডিগ্রি পাস কোর্স পরীক্ষার প্রবেশপত্র নিতে এসে চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসে এক নারী শিক্ষার্থীসহ দু‘জনকে বেধড়ক পিটিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে একদল শিক্ষার্থী। প্রচণ্ড মারধরে গুরুতর আহত হলেও চকবাজার থানার পুলিশ তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে প্রায় পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় থানায় বসিয়ে রাখে।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকার সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। ক্যাম্পাসে নির্যাতিত শিক্ষার্থীরা হলেন তানজিল হাসান রবিন ও ইসরাত জাহান। দু‘জনেই সরকারি মহসিন কলেজের ডিগ্রি পাস কোর্সের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তানজিল হাসান মহসিন কলেজ নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। ইসরাত জাহানও ছাত্রলীগের যুক্ত ছিলেন বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন :  চামড়া যাদের শক্ত সেসব মেয়েদের জন্য এই রঙিন জীবন : বর্ষা

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, ‘মহসিন কলেজে দুই ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুরের দিকে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দু‘জনের বিষয়ে তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকালে দুই শিক্ষার্থী ডিগ্রি পাস কোর্স পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে আসে। এ সময় একদল শিক্ষার্থী তাদের মারধরের পর দুপুর ১২টার দিকে চকবাজার থানার পুলিশকে ডেকে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রচণ্ড মারধরে গুরুতর আহত হলেও চকবাজার থানার পুলিশ তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে প্রায় পাঁচ ঘন্টারও বেশি সময় থানায় বসিয়ে রাখে। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ।

আরও পড়ুন :  আমানত থেকে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক!

মহসিন কলেজের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে কলেজে ডিগ্রি ফাইনাল ইয়ারের পরীক্ষা। এর এডমিট কার্ড বিতরণ হচ্ছে ১৯ নভেম্বর থেকে। কিন্তু ওইদিনই ২৫ জন শিক্ষার্থীর এডমিট কার্ড নিয়ে যান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কলেজ সমন্বয়ক হিসেবে পরিচিত এজিএম বাপ্পী ও ছাত্রশিবির নেতা আনোয়ার। তখন তারা বলে দেয়, ওই ২৫ জন শিক্ষার্থীর এডমিট কার্ড কলেজের বোটানি ডিপার্টমেন্টের প্রভাষক রেজাউল করিমের কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই ২৫ জন শিক্ষার্থীই কোনো না কোনোভাবে ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাদের মধ্যে যারাই এডমিট কার্ড সংগ্রহ করতে গিয়েছেন, তাদের বেধম মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। মারধরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কলেজ সমন্বয়ক এজিএম বাপ্পী।

আরও পড়ুন :  আগস্টে লুট হওয়া অস্ত্র শনাক্ত করা যাচ্ছে না

তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহসিন কলেজ শাখার সমন্বয়ক এজিএম বাপ্পী বলেন, ছাত্রলীগ নেতা তানজিল হাসান রবিন ও ছাত্রলীগের নেত্রী ইসরাত জাহান তিন্নি বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কলেজে আসলে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা তাদের আটক করে। পরে চকবাজার থানা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

এদিকে ক্যাম্পাসে এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি দাবি করেছেন মহসিন কলেজের অধ্যক্ষ কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এগুলো কলেজের বাইরের ঘটনা হয়তো। আমাদের সাড়ে ১২টা পর্য়ন্ত একনাগাড়ে ক্লাস চলেছে। এরপর ১টা থেকে অনার্স প্রথম বর্ষের ক্লাস ছিল। বিকাল ৫টায় আমি কলেজ থেকে বেরিয়েছি। এমন কোনো তথ্য কেউ আমাকে জানায়নি।

ঈশান/মখ/বেবি

আরও পড়ুন