বুধবার- ২২ অক্টোবর, ২০২৫

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ

নটেইনার ডিপো নির্মাণের জন্য বরাদ্দকৃত জমির ইজারা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রাম সিআরবি এলাকায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবপস্থাপকের (জিএম) কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন কয়েক’শ রেলকর্মী। পরে মহাব্যবস্থাপক বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিলে রেলকর্মীরা শান্ত হয়ে ফিরে যান।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দফতরে বিক্ষোভে রেলকর্মীদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারাও অংশ নেন।

চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরের সিজিপিওয়াই এলাকায় রেলওয়ের ইজারা দেওয়ার একটি জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি)। সেখানে বসবাসরত রেলওয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রমিক-কর্মচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডিপো নির্মাণের জন্য রেলের ভূমি বরাদ্দ পাওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি রেলের জায়গায় গড়ে ওঠা কবরস্থান, মসজিদ, মাজার ও আপদকালীন জলাশয় দখল করে নিয়েছে।

আরও পড়ুন :  এছাক ব্রাদার্সের ২৬ কোটির হোল্ডিং ট্যাক্স ঘষামাজায় ৬ কোটি

জানা গেছে, সকাল ১১টার দিকে মিছিল নিয়ে বিক্ষোভকারীরা সিআরবিতে পৌঁছান। তারা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দফতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পরে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা বাধা উপেক্ষা করে রেল ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা সেখানে ‘লিজ বাতিল করো’, ‘কবরস্থান–মসজিদ–মাজার বাঁচাও’—এমন স্লোগান দিতে থাকেন।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জিএম সুবক্তগীনের অফিসের মূল ফটক বন্ধ করে দেয়। এরপর ওই কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ঘেরাও কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এরপর রেলভবনের সামনে গিয়ে আবারও বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।

বিক্ষোভে বক্তারা অভিযোগ করেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়ে শতবর্ষী কবরস্থান, ধর্মীয় স্থাপনা ও জলাশয়ের জমির শ্রেণি পরিবর্তন করে জালিয়াতি করেছে। কবরস্থানটিতে প্রায় ৪৫০টি কবর রয়েছে। সব জেনেও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে লিজ দেওয়া হয়েছে। তারা বলেন, ‘রেলওয়ের ইতিহাসে কখনো ধর্মীয় স্থাপনা ও কবরস্থান দখল করে প্রকল্প নেওয়া হয়নি, এবার রেলওয়ের ভূ-সম্পত্তি বিভাগ নিজেই আইন ভঙ্গ করছে।’

আরও পড়ুন :  বিদেশি সাইটে পর্নো ভিডিও দেওয়া সেই দম্পতি গ্রেপ্তার

তারা বলেন, ‘আন্দোলনের মধ্যেই কৌশলে মসজিদ–মাজার ও কবরস্থান উচ্ছেদের চক্রান্ত চলছে। রেল সচিব ও উপদেষ্টার মৌখিক নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও এখনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণের লিখিত আদেশ আসেনি—যা প্রতারণার শামিল। যৌক্তিক দাবি আদায় না হলে সারাদেশে রেল ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হবে। তবুও কবরস্থান–মসজিদ বিক্রি করতে দেওয়া হবে না।’

দুপুর ১২টার দিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. সুবক্তগীন। রেলওয়ে রানিং স্টাফ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো মজিবুর রহমান ও সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল জিএম’র সঙ্গে আধাঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন :  এছাক ব্রাদার্সের ২৬ কোটির হোল্ডিং ট্যাক্স ঘষামাজায় ৬ কোটি

বৈঠক শেষে বিক্ষোভকারীদের কাছে এসে জিএম সুবক্তগীন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। রেলের মহাপরিচালক ও সচিবসহ সবাই বিষয়টি জানেন এবং পরিদর্শনও করেছেন। আপনাদের স্বার্থ অক্ষুণ থাকবে—কবরস্থান, মসজিদ ও মাজার থাকবে। বুধবার (২২ অক্টোবর) গঠিত কমিটি গিয়ে স্থানগুলো ডিমার্কেশন করবে।’ আশ্বাসের পর দুপুর ১টার দিকে আন্দোলন স্থগিত করে শ্রমিকরা স্থান ত্যাগ করেন।

ঈশান/খম/মম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page