
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে চট্টগ্রামে সকাল থেকে কখনও গুড়ি গুড়ি আবার কখনও মাঝারি ধরণের বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পেশাজীবী মানুষ। আবার পাহাড় ধসের পূর্বাভাস থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি থেকে সরতে গিয়েও দুর্ভোগে পড়েছেন বসতিরা।
বৃহ¯পতিবার (২৯ মে) দুপুরের দিকে চট্টগ্রামের ঝুঁকিপূর্ণ ২৬টি পাহাড় থেকে বসতিদের নিরাপদে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সরকারের দুই সংস্থার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে মাইকিংও করা হচ্ছে। রাত ১০টায় শেষ খবর পর্যন্ত মাইকিং চলছে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারিদের নিরাপদে সরে যেতে চসিক থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন পাহাড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। একই সাথে জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা থাকায় উপকূলবাসীদের নিরাপদ জায়গায় অবস্থান নিতে বলা হয়েছে।
একই কথা বলেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মো. সাদিউর রহিম জাদিদ। তিনি বলেন, চট্টগ্রামে ৬ জোনে ভাগ করে পাহাড়ের বসতি সরে যেতে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মাইকিং করা হচ্ছে, সতর্ক করা হচ্ছে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চট্টগ্রামে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপের কারণে আর্দ্রতা বাড়ায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমে এসেছে এবং আকাশ মেঘলা রয়েছে।
চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, বৃহ¯পতিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ৪৮ দশমিক ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, আগামী কয়েকদিন চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে এই বৃষ্টিপাত দীর্ঘস্থায়ী হবে না এবং তাপমাত্রা আবার বাড়তে পারে। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় মৎস্যজীবীদের গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাহাড় ধসের পূর্বাভাস ও পাহাড় থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চট্টগ্রামের ২৬টি পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়েই বাস করেন প্রায় ৬ হাজার ৫৫৮টি পরিবার। বর্ষায় পাহাড় মরণ ফাঁদে রূপ নেয়। ধসে পড়তে পারে যে কোনো মুহূর্তে। তাই আগাম প্রস্তুতি হিসেবে তাদের দ্রুত সরে যেতে বলা হয়েছে।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকা পরিদর্শন বিপজ্জনক উল্লেখ করে সেখানে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তীব্র বাতাস এবং ঢেউয়ের কারণে সৈকতের কিছু দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে সাগরের ঢেউ দেখার জন্য উৎসুক জনতা সাগর পাড়ে ভিড় করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।