বৃহস্পতিবার- ৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাংহাইয়ের রুপ চট্টগ্রামে

প্রায় ১৪ বছর আগে চট্টগ্রামের লালদীঘির ময়দানে এক জনসভায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর ২০১৭ সালের ৫ই ডিসেম্বর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন কাজে হাত দেন তিনি। তখন একধাপ বাড়িয়ে তিনি স্বপ্ন দেখান-ওয়ান সিটি, টু টাউনের মডেলে চট্টগ্রাম হবে সাংহাই।

সেই স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয়, স্বপ্ন এখন হাতের মুঠোয়। শুধু চট্টগ্রাম নয়, বিশ্বের শতকোটি মানুষের চোখে দৃশ্যমান এখন কর্ণফুলী টানেল। যার নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল হিসেবে। আর যে স্বপ্ন নিয়ে এই টানেল নির্মাণ করা হয়েছে তাও বাস্তব হয়ে ধরা দিতে শুরু করেছে অনেক আগে থেকেই। বলা যায় চট্টগ্রাম এখন সাংহাইয়ের পথে।

আরও পড়ুন :  বৈদেশিক সরঞ্জাম কেনাকাটায় ইন্ডিয়ান কোম্পানির দাপট

এমন মন্তব্য করেছেন দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও অর্থনীতবিদরা। এর মধ্যে চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বঙ্গ্বন্ধু টানেলের নির্মাণ কাজ শুরুর পর থেকে শহর হয়ে উঠা শুরু করেছে কর্ণফুলী নদির পূর্ব প্রান্তের আনোয়ারা উপজেলা। যার ছোঁয়া লেগেছে পাশ্ববর্তি কর্ণফুলী উপজেলায়ও। এই দুই উপজেলা ঘিরে গড়ে উঠেছে নতুন নতুন অনেক শিল্প কারখানা। গড়ে তোলা হচ্ছে চায়না ইকোনমিক জোন। ফলে দুই উপজেলার জমির দামও বেড়েছে কয়েকগুণ।

আবার কর্ণফুলী নদির পশ্চিম প্রান্তে মিরসরাইয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক অঞ্চল। যেখানে ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে। শিল্পকারখানা ও ব্যবসা বাণিজ্যে বেকারত্ব ঘুচার এই দ্বার খোলার আগেই চট্টগ্রাম হয়ে উঠছে সাংহাই। রুপ নিচ্ছে ওয়ান সিটি টু টাউনে। সুদুর প্রসারি এমন পরিকল্পনা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

আরও পড়ুন :  এফ. এ. ক্রিয়েটিভ ফার্ম লিমিটেডের যুগপূর্তিতে দু‘দিনের উৎসব

তিনি বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদির তলদেশে টানেল এখন দক্ষিণ এশিয়ার বিস্ময়, আর চট্টগ্রামবাসীর জন্য বিশাল উপহার। যার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির পথ সুগম হবে। অর্থনীতিতে আসবে গতি। বাড়বে জিডিপি। সমৃদ্ধি অর্জন করবে বাংলাদেশ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মইনুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে চিন্তা করলে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল দেশের জন্য অত্যন্ত ভালো একটি প্রকল্প। প্রকল্পের বাস্তব রুপ দেখে মনে হচ্ছে সাংহাইয়ের পথে হাঁটছে চট্টগ্রাম।

আরও পড়ুন :  বিচ্ছেদের দেড় মাসের মাথায় ফের এক হলেন আবু ত্বহা-সাবিকুন

তবে এ লক্ষ্য পূরণে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক করতে হবে। মেরিন ড্রাইভ হয়ে গেলে এর পাশে অনেক শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। তখন টানেলের ব্যবহারও বেড়ে যাবে। এই সড়ক না হওয়া পর্যন্ত টানেলের পূর্ণ ব্যবহার হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই প্রথম দিকে টানেলের আয় দিয়ে ব্যয় সংকুলান হবে না।

এছাড়া টানেলের কারণে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণপাড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কয়েকটি জেটি নির্মাণের সম্ভাবনা তৈরি হলো। এতে বন্দরের সক্ষমতাও বাড়বে। সেই সাথে নির্বিঘ্ন পণ্য পরিবহনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করাও জরুরি হয়ে পড়েছে।

ঈশান/খম/সুম

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page