
পর্দায় তাকে দেখা যায় শান্ত, স্নিগ্ধ ও লাবণ্যময়ী এক নারী হিসেবে। লাক্স-চ্যানেল আই মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ মুকুটজয়ী জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী তার অভিনয় এবং ব্যক্তিত্ব দিয়ে জয় করেছেন অসংখ্য ভক্তের হৃদয়। তবে বাস্তব জীবনে এই অভিনেত্রী যে একসময় বেশ ডানপিটে ও রাগী ছিলেন, সেই গল্প এখন মুখরিত সামাজিক মাধ্যমে।
সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দেশ টিভির বিশেষ আলাপচারিতায় অংশ নিয়ে ঐশী তার স্কুল জীবনের এক রোমাঞ্চকর ও বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, যা শুনে রীতিমতো চমকে গেছেন তার অগণিত অনুরাগী।
টক-শোতে জীবনের সোনালী দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ঐশী ফিরে যান তার বিদ্যালয় জীবনের দিনগুলোতে। আলাপকালে তিনি জানান, দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় তাকে কেন্দ্র করে ঘটেছিল এক তুলকালাম কাণ্ড। সে সময় এক তরুণ তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়ার সাহস করেছিলেন।
কিন্তু সেই সাহসের ফলাফল যে এতটা ভয়াবহ হবে, তা হয়তো সেই তরুণের কল্পনাতেও ছিল না। ঐশী বলেন, সে ঠিক কীভাবে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল বা তার ধরন কী ছিল—সেটি বড় কথা নয়; বড় কথা হলো প্রস্তাব দেওয়ার পর আমি তাকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পিটিয়েছিলাম। সেই কথা আজও ভুলতে পারছি না আমি।
জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর মুখে এমন মারমুখী আচরণের কথা শুনে অনুষ্ঠানের সঞ্চালকসহ উপস্থিত সবাই বিস্ময় প্রকাশ করেন। ঠিক কোন পরিস্থিতিতে একজন কিশোরী এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে, তা জানতে চাইলে ঐশী বেশ সাবলীলভাবেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি জানান, তখন তিনি বয়সে অনেক ছোট ছিলেন এবং প্রেম-ভালোবাসার মতো আবেগীয় বিষয়গুলো বোঝার মতো মানসিক পরিপক্কতা তার ছিল না। ফলে সেই সময় আকস্মিক ওই প্রস্তাবকে তিনি সহজভাবে নিতে পারেননি এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এমন চরম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
পুরনো সেই স্মৃতি হাতড়াতে গিয়ে ঐশী বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কিছুটা লজ্জিতও বোধ করেন। অনুষ্ঠানের ক্যামেরার দিকে সরাসরি তাকিয়ে তিনি সেই পুরোনো সহপাঠী বা তরুণের উদ্দেশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। হাসিমুখে তিনি বলেন, “আমি আসলে তখন খুবই অপরিপক্ক বা ইমম্যাচিউর ছিলাম।
আমি বুঝতে পারিনি বিষয়টি। তাই এখন ক্যামেরার মাধ্যমেই তাকে উদ্দেশ্য করে বলছি—আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।” ঐশীর এই সহজ স্বীকারোক্তি এবং ক্ষমা চাওয়ার ভঙ্গি উপস্থিত সবার মাঝে হাসির খোরাক জোগালেও, এটি তার ব্যক্তিত্বের একটি সৎ ও মানবিক দিক ফুটিয়ে তুলেছে।
বর্তমানে ঢালিউডের অন্যতম ব্যস্ত এই চিত্রনায়িকা নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে অত্যন্ত সচেতন। একের পর এক মানসম্মত চলচ্চিত্রে অভিনয় করে তিনি যেমন প্রশংসা কুড়াচ্ছেন, তেমনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিজের কাজের আপডেট দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন।
স্কুল জীবনের সেই তেতো-মিষ্টি অভিজ্ঞতা এখন ঐশীর কাছে কেবলই একটি মজার গল্প, যা প্রমাণ করে যে সময়ের সাথে সাথে মানুষ কতটা পরিণত হয়। ছোট পর্দার গণ্ডি পেরিয়ে বড় পর্দায় নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করা এই অভিনেত্রী ভবিষ্যতে আরও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে দর্শকদের সামনে হাজির হবেন বলেই প্রত্যাশা ভক্তদের।












































