
চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর ১১ টুকরো করে পালানো ঘাতক স্বামী সুমন (৩৫) কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাতে র্যাব-৭ ও র্যাব-৯ যৌথ অভিযান চালিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব চট্টগ্রামের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এম. আর. এম মোজাফফর হোসেন শনিবার (১২ জুলাই) এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার সুমনের বাড়ি কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী গ্রামে। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুমনকে বায়েজিদ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এম. আর. এম মোজাফফর হোসেন।
আর নিহত নারীর নাম ফাতেমা বেগম পলি। তিনি স্বামী সুমনের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন। সুমন পেশায় গাড়ি চালক। ফাতেমার বাড়ি কুমিল্লা সদর দক্ষিণে। তার বাবার নাম কামাল উদ্দিন। সিফাত নামে তাদের আট বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
র্যাব জানায়, গত ৯ জুলাই দিনগত রাতে নগরীর রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ভাড়া ফ্ল্যাটে ৬-৭ জন অচেনা যুবক নিয়ে আসেন সুমন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন উত্তেজিত হয়ে ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
হত্যার পর স্ত্রীর মরদেহ ১১টি টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে রাখে। কিছু অংশ বাথরুমের কমোডেও ফেলে দিয়ে পানির ফ্লাশ দিয়ে গুমের চেষ্টা করে। ঘটনার দিন রাতে ভবনের নিরাপত্তাকর্মী মশিউর রহমান ঘর থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক শব্দ পেয়ে সন্দেহ হলে সুমনের বাসায় যান। ভিতরে ঢুকে রক্তের দাগ ও মরদেহের অংশবিশেষ দেখতে পেয়ে তিনি নিচে গিয়ে অন্যদের ডাকতে গেলে সুমন জানালার গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান।
ঘটনার পর নিহত নারীর বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রুবেল বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সুমনের বিরুদ্ধে হত্যা ও মরদেহ গুমের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়।
আনোয়ার হোসেন রুবেল জানান, ১০ বছর আগে পারিবারিকভাবে সুমনের সঙ্গে বিয়ে হয় পলির। বিয়ের পর সুমন সৌদি আরবে পাড়ি জমালেও ভিসা জটিলতায় গত বছর দেশে ফিরে চট্টগ্রামে একটি পিকআপ ভ্যান চালানো শুরু করেন। তবে দেশে ফেরার পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ বেড়ে যায়। একাধিকবার পারিবারিকভাবে সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা স্থায়ী হয়নি।