
অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩০ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক বদরুল আলম ভূঞা পৃথক দুই ধারায় এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেছেন, রায় দিয়ে সমাজ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়। দুর্নীতিগ্রস্তদের সমাজ থেকে বয়কট করতে হবে। তাদের সঙ্গে চলা-ফেরা করবেন না, আত্মীয়তা করবেন না। তাদের কাছে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেবেন না। বিয়ে দিলেই তারা সুখী হবে না। তারা দাওয়াত দিলে যাবেন না। জেনেশুনে কারোর দাওয়াতে যাওয়া মানে রাষ্ট্রবিরোধী অবস্থান নেওয়া।
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে সেলিম প্রধানকে চার বছর কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া মানি লন্ডারিংয়ের দায়ে চার বছর কারাদণ্ড, ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এদিকে পৃথক দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে। সেক্ষেত্রে তাকে চার বছর কারাভোগ করতে হবে।
রায় ঘোষণার সময় কারাগারে থেকে সেলিম প্রধানকে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তার স্ত্রীও আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান। মামলায় তার বিরুদ্ধে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে দুদকের উপ-পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান। চার্জশিটে ৫৭ কোটি ৭৯ লাখ ২৮৮ টাকার জ্ঞাতআয় বর্হিভুত সম্পদ অর্জন এবং ২১ কোটি ৯৯ লাখ ৫১ হাজার ১৪৫ হাজার টাকা থাইল্যান্ড ও ইউএসএতে পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত- ৬ এর বিচারক আসামির অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে চার্জগঠনের আদেশ দেন। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।