মঙ্গলবার- ১৪ অক্টোবর, ২০২৫

চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার জ্বালানি তেল চোরচক্রের মূলহোতা হারুন!

চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার জ্বালাানি তেল চোরচক্রের মূলহোতা হারুন!

ট্টগ্রামে জ্বালানি তেল চোর সিন্ডিকেটের মূল হোতা ইপিজেড থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মো. হারুনুর রশিদকে গ্রেপ্তার করেছে।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) দিনগত রাতে নগরের ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর এলাকার সিমেন্ট ক্রসিং এলাকা থেকে যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও ও ইপিজেড থানা পুলিশের একটি দল। ইপিজেড থানার ওসি মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, শুক্রবার দিনগত রাতে হারুনুর রশিদকে আমরা সিমেন্ট ক্রসিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছি। চোরাকারবারসহ বিভিন্ন অভিযোগে হারুনুর রশিদের নামে নগরীর পতেঙ্গা ও ইপিজেড থানায় ৪টিরও বেশি মামলা রয়েছে।

সর্বশেষ ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এমভি তানিশা জাহাজ থেকে ১১ হাজার লিটার চোরাই ভোজ্যতেল উদ্ধার করে নৌ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় হারুনুর রশিদসহ তার ভাইয়ের নামে একটি মামলা করা হয়। সরকার পতনের আগের দিন তিনি ভারতে গিয়েছিলেন। এরপর গত বছরের ২২ আগস্ট আবার ফিরে আসেন। আমরা তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।

আরও পড়ুন :  সিএমপির ‘মানিলন্ডারিং’ তালিকায় ১৪৫ নেতা ও মন্ত্রী-এমপির নাম

আইনশৃংখলা বাহিনীর তথ্যমতে, বন্দর-পতেঙ্গা এলাকায় জ্বালানি তেল চুরির একাধিক সিন্ডিকেট থাকলেও মূলত অধিক সক্রিয় হারুনের সিন্ডিকেট। তার নেতৃত্বাধীন চক্রটি বালুবাহী বার্জ দিয়ে তেল পাচার করে। ‘এমভি তানিশা’ নামে তার একটি জাহাজ আছে। আর ওই জাহাজে করে তেল পাচার করেন তিনি। বিগত সরকারের আমলে তিনি প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ করে’ চালাতেন এই চোরাই তেলের ব্যবসা। হুমায়ুন, তাজু ও সুমন নামে তার একাধিক সহযোগী রয়েছে।

আরও পড়ুন :  নির্বাচন কমিশন প্রতীকের সংখ্যা বাড়াতে-কমাতে পারে : সিইসি

পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম মহানগরের পতেঙ্গা, ইপিজেড, কর্ণফুলী, সদরঘাট ও বন্দর এলাকা ঘিরে জ্বালানি তেলচোর সিন্ডিকেটের তৎপরতা চলে। বিদেশে থেকে তেলসহ খাদ্যপণ্য নিয়ে আসা জাহাজ থেকে তেল সংগ্রহ করে এসব এলাকায় মজুদ করা হয়। এর সাথে যুক্ত রয়েছেন কিছু অসাধু নাবিক। জাহাজে থাকা নাবিক এবং অন্য স্টাফদের জন্য খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জাহাজে পৌঁছে দেওয়ার নামে বহির্নোঙরে ভাসমান জাহাজ থেকে ড্রামে ভরে তেল নামানো হয়। পরে ওই তেল ভাউচার করে খোলা বাজারে বিক্রি হয়।

চালকরা পতেঙ্গা ভিআইপি সড়কে গাড়ি থামিয়ে বড় বড় পাইপের মাধ্যমে অল্প সময়ে ভাউচার থেকে নামিয়ে ফেলে তেল। এসব তেলের মধ্যে রয়েছে কেরোসিন, অকটেন, পেট্রোল ও ডিজেল। এছাড়া বন্দর থানাকেন্দ্রিক যেসব তেলের দোকান রয়েছে; এসব দোকান চোরাই তেল কিনছে চট্টগ্রাম বন্দর ও কনটেইনার ডিপো থেকে বের হওয়া কনটেইনারবাহী লরি ও কাভার্ডভ্যান থেকে। চট্টগ্রাম মহানগরের বন্দর-পতেঙ্গায় ৪ থেকে ৫টি জ্বালানি তেল বেচাকেনার দোকানের অনুমতি রয়েছে। অথচ অর্ধশত চোরাই তেলের ভাসমান দোকান গড়ে উঠেছে এলাকাটিতে।

আরও পড়ুন :  সিএমপির ‘মানিলন্ডারিং’ তালিকায় ১৪৫ নেতা ও মন্ত্রী-এমপির নাম

তেলচোর সিন্ডিকেটের হোতা হারুনুর রশিদ গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের আগের দিনই দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান। তিনি মূলত দক্ষিণ হালিশহর ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমনের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিদেশে পলাতক ‘নেতা সুমনের’ সবুজ সংকেত পেয়ে তিনি ২২ আগস্ট দেশে ফেরেন। এরপর থেকে আত্মগোপনে থেকেই নিজের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

ঈশান/খম/বেবি

আরও পড়ুন

You cannot copy content of this page