চট্টগ্রাম মহানগরে ৩১টি ওয়ার্ডে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে বিএনপি। এর আগে গত ৩ জুন ৩৫টি ওয়ার্ডে তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তম্মধ্যে ২৮টি ওয়ার্ড পূর্ণাঙ্গ কমিটি পেলেও বাদ পড়ে ৭টি ওয়ার্ড। অবশ্যই নতুন কমিটি পেয়েছে ৪টি ওয়ার্ড।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) শওকত আজম খাজা বুধবার (২৫ জুন) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মহানগর বিএনপির ৩৫টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে তিন সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে ক্ষোভ ছিল নেতাদের। কমিটিগুলোতে যোগ্যদের স্থান দেয়া হয়নি দাবি করে তা বাতিলের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্ষোভসহ মিছিল-সমাবেশ হয়েছে। ঘটেছে হাতাহাতির ঘটনাও।
সেই ক্ষোভের মধ্যেই মঙ্গলবার (২৪ জুন) ৩১টি ওয়ার্ডে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে মহানগর বিএনপি। এতে পূর্বে ঘোষিত আহ্বায়ক সদস্য সচিবকে বহাল রাখা হয়। ওই হিসেবে বলা যায়, চলতি মাসের শুরুতে ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির আকার বেড়ে পূর্ণাঙ্গ হয়েছে।
এদিকে আগে যে ৩৫টি সাংগঠনিক ওয়ার্ডে তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটির গঠন করা হয় তম্মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডের আহবায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। ওয়ার্ডগুলো হচ্ছে ১০নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড, ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড, ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড, ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড, ২৫নং রামপুর ওয়ার্ড, ২৮নং ডবলমুরিং ওয়ার্ড ও ৩৭নং রামপুর ওয়ার্ড। তবে এর বাইরে নতুন করে ৪টি ওয়ার্ডে ৩১ সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
এর মধ্যে ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডে মো. বেলালকে আহবায়ক ও আবদুল করিমকে সদস্য সচিব করা হয়। ৯ নম্বর উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডে মো. বোরহান উদ্দিন প্রধানকে আহবায়ক ও মাহাবুব আলমকে সদস্য সচিব, ২৩ নম্বর উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে মো. আবদুল হালিমকে আহবায়ক ও এম. এ হাসনাতকে সদস্য সচিব এবং ৪৪ নং ওয়ার্ডে মো. মামুন আলমকে আহবায়ক ও জাফর আহম্মদ খোকনকে সদস্য সচিব করা হয়।
অপর ২৮টি ওয়ার্ড হচ্ছে- পাঁচলাইশ, উত্তর চান্দগাঁও, মোহরা, পূর্ব ষোলশহর, পশ্চিম ষোলশহর, শুলকবহর, লালখান বাজার, বাগমনিরাম, চকবাজার, পশ্চিম বাকলিয়া, দক্ষিণ বাকলিয়া, দেওয়ান বাজার, এনায়েত বাজার, ষোলশহর, আগ্রাবাদ, পশ্চিম মাদারবাড়ী, পূর্ব মাদারবাড়ী, আলকরণ, আন্দরকিল্লা, ফিরিঙ্গি বাজার, পাথরঘাটা, গোসাইলডাঙ্গা, উত্তর পতেঙ্গা, দক্ষিণ পতেঙ্গা, কসমোপলিটন, আমিন শিল্পাঞ্চল, বায়েজিদ, নাসিরাবাদ শিল্পাঞ্চল ও দক্ষিণ চান্দগাঁও ওয়ার্ড।
মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক (দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত) শওকত আজম খাজা জানান, পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, অতীত আন্দোলনে ভূমিকা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয়তাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যাঁরা দুঃসময়ে দলের পাশে থেকেছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং সক্রিয়ভাবে সংগঠন পরিচালনায় ভূমিকা রেখেছেন, তাঁদেরই যথাযথ মূল্যায়নের ভিত্তিতে এ কমিটিগুলো গঠন করা হয়েছে। তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি ঘোষণার পর যারা বিক্ষোভ করেছে তাদের মধ্যেও যোগ্যদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রাখা হয়েছে। সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কমিটি হয়েছে। কাউকে অবমূল্যায়ন করা হয়নি। মহানগর বিএনপির সভাপতি এরশাদ উল্লাহ ও সাধারণ স¤পাদক নাজিমুর রহমানের সই করা এক চিঠিতে এসব কমিটি গঠন ও অনুমোদন দেওয়া হয়। নগরীর বাকি ওয়ার্ড কমিটিগুলোও গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, যা যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ ও সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান বলেন, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর নগরীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নগরীর ১৫টি সাংগঠনিক থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ড কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করে মহানগর বিএনপি। দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে গত ৩ জুন ৩১টি ওয়ার্ডে তিন সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় কমিটিগুলোকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিগুলোর মাধ্যমে দলের ভেতর গণতান্ত্রিক চর্চা আরও সুসংহত হবে এবং তৃণমূলে সংগঠনের ভিত্তি আরও মজবুত ও কার্যকর হবে।
