
দুর্নীতি এখন একক লোভের উপাখ্যান নয়—এটি পরিণত হয়েছে পারিবারিক ও ভালবাসার আবরণে মোড়ানো সংগঠিত অপরাধে। স্ত্রী ও প্রেমিকার বিশ্বস্ত দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে রাখা হচ্ছে শত শত কোটি টাকার অদৃশ্য সিন্দুক।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলাগুলো খুলে দিয়েছে এমন ভয়ংকর বাস্তবতার জানালা। যেখানে সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আমলা, কর কমিশনার থেকে শুরু করে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও দুর্নীতির টাকা রক্ষা করেছেন স্ত্রী ও প্রেমিকার নামে। গড়ে তুলেছেন মানিলন্ডারিংয়ের নিরাপদ দুর্গ।
বিস্ময়ের ব্যাপার হলো- স্ত্রী ও প্রেমিকার যে সম্পর্কটি হওয়ার কথা ছিল প্রণয়ের, তা হয়ে উঠেছে লোভের, পাচারের পথ। স্ত্রী ও প্রেমিকারা দুর্নীতিবাজদের জীবনের সাথী হওয়ার পরিবর্তে হয়েছেন দুর্নীতির সাথী। স্ত্রীর নামে সিন্দুক হলে প্রেমিকার নামে গড়ে তোলা হয়েছে অঢেল সাম্রাজ্য। এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের নীরব হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে যৌনসঙ্গীরা।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত দুদকের জালে ধরা পড়া দুর্নীতিরগুলোর তথ্য পর্যবেক্ষণে অন্তত ৩৩টি মামলায় এমন ২৮টি জুটি পাওয়া গেছে। যেখানে স্বামী ও প্রেমিকের দুর্নীতির প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন স্ত্রী ও প্রেমিকা! তারা শুধু সম্পদের মালিকই নন, অনেক ক্ষেত্রে প্রধান অর্থ লেনদেনকারীর ভূমিকাও পালন করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দুর্নীতি এখন শুধু একক কোনো ব্যক্তির সমস্যা নয়, এটি পরিণত হয়েছে এক সামাজিক সিন্ডিকেটে। যেখানে পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু, এমনকি প্রেমিকাও দুর্নীতির জাল বুনতে সাহায্য করেন। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইন যতই শক্ত হোক না কেন, যখন পরিবারের ভেতরেই সেই অবৈধ সম্পদের মালিকানা তৈরি হয়, তখন প্রমাণ সংগ্রহ কঠিন হয়ে যায়। এ কারণেই হয়ত এত বছর পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে শুধু ধন-সম্পদ নয়, লুকিয়ে আছে নৈতিকতার গভীর অবক্ষয়ের চিত্র। একদিকে যখন সাধারণ মানুষ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, চিকিৎসা সংকটে ধুঁকছে, অন্যদিকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে নিজেদের পরিবারকে পরিণত করছেন দুর্নীতির গৃহকর্মশালায়।
আনিসুল হকের গার্লফ্রেন্ড তৌফিকা করিম
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের গার্লফ্রেন্ড পরিচয়ধারী তৌফিকা করিমের নামে ৮৮টি ব্যাংক হিসাব থেকে ৩৭৪ কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৮৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। বৈধ আয় মাত্র ২.৬২ কোটি টাকার বিপরীতে তার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ৫৬ কোটি ৬১ লাখ টাকারও বেশি। আনিসুল হকের পরিচয়ে পুরো ঢাকা শহরে অন্ধকার জগতের দাপুটে নাম তৌফিকা করিম এমনটাই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
নওফেল ও এমা ক্লেয়ার জুটি
সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও তার স্ত্রী এমা ক্লেয়ার বার্টনের বিরুদ্ধে অভিযোগ—তারা যৌথভাবে প্রায় ১১৩ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন। এমা ক্লেয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রায় ৮৪ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং নওফেলের নামে দুই কোটি ৯৪ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ রয়েছে।
হাছান মাহমুদ ও নূরান ফাতেমা জুটি
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা থাকায় সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের একটি জিপ গাড়ি ও ৯ ব্যাংক হিসাব এবং তার স্ত্রী নূরান ফাতেমার ১২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
হাছান মাহমুদের বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত ১ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩১৮ টাকা সম্পদের মালিকানা অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তার নিজ, যৌথ ও ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নামে মোট ৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ ৩৭ হাজার ৫৬৭ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন। নূরান ফাতেমার বিরুদ্ধে তার নিজ, যৌথ এবং তার প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে পরিচালিত মোট ৫৬টি হিসাবে সর্বমোট ৬৮৩ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৫৪ টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে।
শেখ হেলাল ও শেখ রুপা জুটি
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী শেখ রূপা চৌধুরীর বিরুদ্ধেও পৃথক মামলায় প্রায় ১৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৫৩ কোটি টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।
মেহের আফরোজ চুমকি ও মাসুদ জুটি
গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি মেহের আফরোজ চুমকি ও তার স্বামী মুহাম্মদ মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ২ কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
নাজমুল হাসান পাপন ও রোকসানা জুটি
সাবেক যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও তার স্ত্রী রোকসানা হাসান—এই দম্পতির বিরুদ্ধে রয়েছে মোট ৭৪২ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন ও ৩২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ। শুধু রোকসানা হাসানের ব্যাংক হিসাবেই পাওয়া গেছে ৪৯ কোটি টাকার লেনদেন।
এনামুল হক ও তহুরা জুটি
রাজশাহী-৪ আসনের সাবেক এমপি এনামুল হকের নামে থাকা ২২টি ব্যাংক হিসাবে পাওয়া গেছে ২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকার লেনদেন। তার স্ত্রীর নামে পাওয়া গেছে ৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার অস্বাভাবিক ব্যাংক লেনদেন।
আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও ইসমত আরা জুটি
সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ ও তার স্ত্রী ইসমত আরা বেগমের বিরুদ্ধে করা দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, তারা যৌথভাবে প্রায় ৩৪ কোটি টাকার লেনদেন করেছেন এবং প্রায় ২ কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন।
মীরা ও মোশাররফ জুটি
সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার মীরা ও তার স্বামী মোশারফ হোসাইন সরদার দুজনেই মামলায় অভিযুক্ত। তাদের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনের পরিমাণ ৩৬ কোটি টাকারও বেশি।
ডিআইজি শিমুল ও ফারহানা জুটি
পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ রফিকুল ইসলাম শিমুল ও তার স্ত্রী ফারহানা রহমান—দুদকের মামলায় বলা হয়েছে, তারা দুজন মিলে অবৈধ উপায়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন।
আউয়াল ও লায়লা জুটি
পিরোজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ভুয়া সনদ ব্যবহার করে প্রভাষক পদে চাকরি নিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে।
স্বপন ও মেহবুবা জুটি
সাবেক হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন ও তার স্ত্রী মেহবুবা আলমের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে ৬৫৩ কোটি টাকার লেনদেন ও ৩ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে।
জিয়াউর রহমান ও কাশমেরী জুটি
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউর রহমানের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সঙ্গে তার স্ত্রীর মোসা. কাশমেরী বেগমের সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে দুদক। তার বিরুদ্ধে ১ কোটি ৮ লাখ ৩২ হাজার ৮৫৩ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, ৫টি হিসাবে মোট জমা ও উত্তোলনসহ ১০ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার ৯৪৪ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার স্ত্রী মোসা. কাশমেরী বেগমের বিরুদ্ধে ৫২ লাখ ৪৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও ১১ জুটি
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের সাবেক হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও তার স্বামী তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার অর্থ পাচারের অভিযোগে তদন্ত চলছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে তারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছেন বলে সন্দেহ করছে দুদক।
ট্যাক্সেস অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সাবেক সদস্য রঞ্জিৎ কুমার তালুকদার ও তার স্ত্রী ঝুমুর মজুমদার—এই দম্পতি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থে প্রায় ১১ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্ত্রী ঝুমুর মজুমদার একাই অর্জন করেছেন ৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ।
এক্সিম ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্ত্রী নাছরিন ইসলামের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে ২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে। আদালত তার নামে থাকা প্লট, ফ্ল্যাট এবং ৫৫টি কোম্পানির শেয়ার জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে।
একইভাবে,সাবেক শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুটি মামলা করা হয়েছে ১০২ কোটি টাকার লেনদেন ও অবৈধ সম্পদের অভিযোগে।
এছাড়া পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের চট্টগ্রাম পরিচালক সাইদুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শায়লা আক্তার, মামুনুর রশীদ কিরণ ও তার স্ত্রী জেসমিন আক্তার, মাহবুব আলী ও তার স্ত্রী শামীমা জাফরিন, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম ও তার স্ত্রী ডা. জাহানারা আরজু, শাহীন চাকলাদার ও তার স্ত্রী ফারহানা মালা, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও তার স্ত্রী ঊষা রাণী চন্দ, গণেশ চন্দ্র মণ্ডল ও তার স্ত্রী ডা. সবিতা মল্লিক—প্রত্যেকের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের পৃথক মামলা হয়েছে।
যা বললেন টিআইবি পরিচালক
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিগ্রস্ত পুরুষের পরিবারের নারী সদস্য বা নারী প্রিয়জন অনেক ক্ষেত্রেই বাধ্য হয়ে দুর্নীতির অংশীদার হন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা যে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদের অংশীদার হচ্ছেন, তা হয়ত জানেনও না বা জানলেও পারিবারিক বা সামাজিক বাস্তবতার কারণে, মেনে নিতে বাধ্য হন বা প্রতিবাদ করতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে আবার কেউ কেউ দুর্নীতির হাতিয়ার, অংশীদার বা অনুঘটকের ভূমিকায় লিপ্ত হন।
এমনও দেখা যায়, যে নারী স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্জিত ক্ষমতার অপব্যবহার তথা দুর্নীতি করেন বা পুরুষ প্রিয়জনকে দুর্নীতিতে উৎসাহ বা চাপ দেন, যোগসাজশ করেন বা সুরক্ষা দেন। সকল ক্ষেত্রেই মূল অভিযুক্ত পুরুষের পাশাপাশি অভিযুক্ত নারীর ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী অপরাধী হিসেবে জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তে যেসব নাম উঠে এসেছে, তাদের অনেকেই এখনো রাজনৈতিক প্রভাব বা সামাজিক অবস্থান থেকে সুবিধাভোগী। কোনো মামলার চার্জশিট হয়নি, কোথাও আবার তদন্ত ধীরগতিতে চলছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুদকের এসব মামলার সুরাহা দ্রুত করতে হবে। বিচারের মাধ্যমে সমাজে দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে হবে, ভবিষ্যতের সুরক্ষায়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ‘আমাদের দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অসাধু চক্র, যারা পদের প্রভাব ও শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। এক্ষেত্রে তারা বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে কখনো স্ত্রী আবার কখনো পরকীয়া প্রেমিকের মতো ব্যক্তিদের ব্যবহার করেন। বৈশ্বিকভাবেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নারীদের ব্যবহারের নজির রয়েছে। আমাদের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সাধারণত নারীদের সন্দেহের বাইরে রাখা হয়। এটিকে কাজে লাগিয়েই দুর্নীতিবাজরা কৌশল নেন।’
এই অপরাধ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘আমাদের দেশে সম্প্রতিক সময়ে এমপি, মন্ত্রী, আমলাদের যে ধরনের দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসছে, তা জনগণের মধ্যে আস্থার সংকটকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে যদি মূল অপরাধী ও তার সহযোগীদের সুষ্ঠু বিচার না হয়, তবে ভবিষ্যতে অপরাধীরা অপরাধের এই কৌশলগুলোকে ব্যবহার করবে। এটি যেন না হয়, সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি মনে করেন, যেখানে সংসার ও ভালোবাসার সম্পর্ককে দুর্নীতির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত করা হয়, সেখানে শুধু অর্থ নয়, নৈতিকতাও ধ্বংস হয়। এই ধ্বংস যেন আর গভীর না হয়, সে জন্য দ্রুত বিচারের মাধ্যমে ‘বিশ্বস্ততা’র মুখোশের আড়ালের দুর্বৃত্তদের আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো এখন সময়ের দাবি।