
অভিনয়ে খুব একটা পারদর্শী ছিলেন না তবুও আশির দশকে দক্ষিণী সিনেমার পর্দা কাঁপিয়েছেন। পর্দায় আবেদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে তার জুড়ি মেলা ভার। ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে কোনো আপত্তি না থাকায় ভারতীয় বিনোদন জগৎ তার নাম দিয়েছিল— যৌনতার দেবী। বলছি দক্ষিণী অভিনেত্রী সিল্ক স্মিতার কথা। স্মিতার প্রকৃত নাম বিজয়লক্ষ্মী ভাদলাপাতলা।
অভিনেত্রী স্মিতা যতক্ষণ পর্দায় থাকতেন ততক্ষণ নাকি দর্শক চোখের পাতা ফেলতে পারতেন না। তার শরীরী হিল্লোল ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। বেশিরভাগ সিনেমায় তিনি পানশালার নর্তকী হিসেবেই হাজির হতেন।
জীবদ্দশায় পানশালার নর্তকী হওয়ার বিষয়ে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমি সাবিত্রী, সুজাতা এবং সরিতার মতো চরিত্রের অভিনেত্রী হতে চাই। আমি আমার দ্বিতীয় ছবিতে সিল্ক স্মিতা নামের একটি চরিত্রে অভিনয় করেছি। তারপর থেকেই একই রকমের চরিত্রেই অভিনয় করে চলেছি।’
সিল্কের জীবনের নানা অধ্যায় নিয়ে ২০১১ সালে বলিউডে নির্মিত হয় ‘দ্য ডার্টি পিকচার’ সিনেমা। যার নাম-ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন বিদ্যা বালান।
১৯৬০ সালের ডিসেম্বর মাসে অন্ধ্রপ্রদেশের কোবলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন সিল্ক স্মিতা। দরিদ্রতার কারণে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। মাত্র ১৪ বছর বয়সে সাতপাঁকে বাঁধা পড়েন স্মিতা। কিন্ত অভিনেত্রীর স্বামীও তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেন। ফলে স্বামীর ঘর ছেড়ে নিজের দূর সম্পর্কের খালার বাড়িতে চলে যান।
জীবন বাঁচাতে গৃহকর্মীর কাজ নেন। এরপর একটু একটু করে ভাগ্য ফিরতে শুরু করে। দক্ষিণী সিনেমায় ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ২ দশকের অভিনয় জীবনে ৪৫ টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ঘনিষ্ট চরিত্রের অভিনয়ের জন্য পরিচিত হলেও সেই সময় দক্ষিণী সুপারস্টার অভিনেতা রজনীকান্ত ও কমল হাসানের বিপরীতে দর্শক সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন স্মিতাকেই।
৭০-এর দশকের শেষের দিক থেকে ৯০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত স্মিতা হয়ে উঠেছিলেন দর্শকদের হার্টথ্রব। সিনেমায় তার একটি মাত্র আইটেম ডান্স যে কোনো ছবিকে সাফল্য এনে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। কিন্তু হঠাৎ একদিন এক দমকা হাওয়ায় নিভে যায় অভিনেত্রীর জীবন প্রদীপ। ১৯৯৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর নিজ বাসা তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অভিনেত্রীর আকস্মিক মৃত্যু আজও রহস্যই রয়ে গেছে।