বুধবার- ১২ মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে ওসির বিরুদ্ধে ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে সন্ত্রাসীর স্ত্রীর মামলা

চট্টগ্রামে ওসির বিরুদ্ধে ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে সন্ত্রাসীর স্ত্রীর মামলা
print news

ট্টগ্রাম মহানগরের বায়েজিদ থানার ওসি, দুই এসআইসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে ভ্রূণ হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে।চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী মো. সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আকতার বাদি হয়ে এই মামলা করেছেন। মামলায় তিনি পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে অকথ্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।

গত ১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে এই মামলা করা হলেও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে গত রবিবার (২৬ জানুয়ারি)। মামলায় ৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, বায়েজিদ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান (৪৬), উপ-পুলিশ পরিদর্শক জগৎজ্যোতি দাস (৪১), মনিরুল ইসলাম (৪০), বায়েজিদ থানার পুকুরপাড় খন্দকার পাড়ার আব্দুল কাদেরের ছেলে সরোয়ার প্রকাশ বাবলা (৩৫), হাটহাজারী থানার পশ্চিম কোয়াইশ এলাকার মাহবুবুল আলমের ছেলে জাবেদ প্রকাশ ভাগিনা জাবেদ ( ৩১), চান্দগাঁও থানার সিঅ্যান্ডবি কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকার আনিকা ইসলাম মনি (৩০)।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১২ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৪টায় মো. সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করতে বায়েজিদ থানা পুলিশের একটি দল তাদের বাসায় আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে ১০ মামলার পলাতক আসামি সন্ত্রাসী জাবেদ প্রকাশ ভাগিনা জাবেদ বাদির ঘরে ঢোকেন এবং বাদি শারমিন আকতারকে পুলিশের সামনেই মারধর করেন। এ সময় কোনো নারী কনস্টেবল ছাড়াই সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিনকে আটক করা হয়।

এ ছাড়া এসআই মনিরুল ইসলাম মামলার জব্দ তালিকা করার সময় বাদির একটি আইফোন, একটি স্যামসাং ফোন ও পাসপোর্ট জব্দ করেন। কিন্তু তা জব্দ তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি। এ সময় আসামিরা শারমিনকে এলোপাতাড়ি মারধর, লাঠি দিয়ে আঘাত এবং তলপেটে লাথি দেন।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, থানার ওসি শারমিনকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন এবং পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জগৎজ্যোতি দাস বাদিকে তলপেটে লাথি মারেন। এতে বাদি ৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় নির্যাতনের একপর্যায়ে তার যৌনাঙ্গ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তাকে বিনা চিকিৎসায় থানা হেফাজতে নিয়ে যান। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাদিকে আদালতে উপস্থাপন করার বিধান আইনে উল্লেখ থাকলেও পুলিশ তা না করে বাদিকে দুই দিন থানায় অমানবিক ও পৈশাচিক নির্যাতন করেন। ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় অর্থাৎ আটকের দীর্ঘ ৩৯ ঘণ্টা পর বিনা চিকিৎসায় তাকে বায়েজিদ থানার মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়।

মামলার বাদি শারমিন আকতার বলেন, ‘শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ৮ জানুয়ারি আদালত তাকে জামিন দেন। জামিন পেয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাকে জানিয়েছেন, তার গর্ভের শিশুর ভ্রূণ নষ্ট হয়ে গেছে। শারমিনের অভিযোগ, পুলিশি নির্যাতনে তার গর্ভে থাকা শিশু মারা গেছে।

বাদির আইনজীবী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘গত ১৫ জানুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দাখিল করি। মামলায় বাদির জবানবন্দি নিয়েছেন এবং আদেশের জন্য ৩০ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।’

জানতে চাইলে বায়েজিদ থানার ওসি মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। যারা খুনি, যারা খুন করবে, অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করবে, সন্ত্রাস করবে, তাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। তাদের ক্ষেত্রে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হবে। আমি আল্লাহকে ছাড়া কাউকে ভয় করি না।

ঈশান/মখ/মসু

আরও পড়ুন

No more posts to show

You cannot copy content of this page