
রমজান মাস উপলক্ষ্যে খেজুরের দাম মানুষের নাগালে রাখতে আমদানি শুল্ক ও শুল্কায়ন মূল্য কমিয়েছে সরকার। এমনকি আমদানিও হয়েছে চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। এরপরও বাজারে তেমন কমেনি খেজুরের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি শুল্ক ও শুল্কায়ন মূল্য কমালেও ডলারের দাম বাড়ার কারণে খেজুরের দাম তেমন কমেনি।
চট্টগ্রামের ফলমণ্ডি ও খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজার ও খুচরা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান এলে প্রতি বছরই খেজুরের চাহিদা বাড়ে। এবছর চাহিদা মেটাতে খেজুরের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।
একইসাথে শুল্কায়ন মূল্যও ৮ থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হয়েছে। এর ফলে খেজুরের আমদানি ব্যয় ২০-২৫ শতাংশ কমলেও, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমদানিতে দামের তেমন হেরফের হয়নি। অথচ গত বছরের তুলনায় এবার খেজুরের আমদানিও হয়েছে দ্বিগুণ।
ফলমণ্ডি ও খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরব, ইরান, মিশর, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া ও দুবাইসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানিকৃত খেজুর পাওয়া যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের খেজুরের মধ্যে নাগাল ব্র্যান্ডের ৫ কেজি খেজুর ১৪০০-১৫০০ টাকা, তিউনিসিয়ার টেটকো ফরিদি ৫ কেজির প্যাকেট ২১০০-২২০০ টাকা, সৌদি আরবের ৫ কেজি মাশরুখ খেজুর ২১০০-২২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া ইরানি মরিয়ম খেজুর ৫ কেজি ৪০০০-৫০০০ টাকা, সৌদি আজওয়া খেজুর ৫ কেজি ৪০০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা আগেও বিক্রয় হয়েছে প্রায়ই একই দামে। তবে কোন কোন খেজুর বিক্রয় হয়েছে একটু বেশি দামে। সে হিসেবে দাম তেমন কমেনি খেজুরের।
চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৭৬৮ টন খেজুর আমদানি হয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। বাজারে এই খেজুর আমদানি না হলে দাম আরও বাড়ত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান মাসে সারাদেশে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টন খেজুরের চাহিদা থাকে। খেজুরের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকলেও, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও একেক ব্যাংকের একেক রকম দামের কারণে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে।
খাতুনগঞ্জের খেজুর ব্যবসায়ী মেসার্স আল মদিনার স্বত্বাধিকারী এহসান উল্লাহ জাহেদী বলেন, রমজানে খেজুরের ব্যবসা চাঙ্গা হলেও বছরের বাকি সময় চাহিদা কম থাকে। তবে আমদানি শুল্ক ও শুল্কায়ন মূল্য কমায় এবার ক্রেতার নাগালের মধ্যে রয়েছে খেজুর।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন জানান, খেজুরের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে এবং প্রচুর আমদানি হয়েছে। একই কথা বলেছেন চট্টগ্রাম ফল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তৌহিদুল আলমও।