শুক্রবার- ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪৫ জন চমেক হাসপাতালে

চট্টগ্রামে নিউমার্কেট মোড়ে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪৫ জন চমেক হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম মহানগরের নিউমার্কেট এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশ ও সরকারদলীয় নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে অন্তত ৪৫ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের কারো নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা. মোমিন উল্লাহ ভুইঁয়া রবিবার দুপুর ২টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার পর থেকে অন্তত ৪০ জনকে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ জন গুলিবিদ্ধ। গুরুতর আহত দুইজন। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের বেশিরভাগই মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। অনেকের হাতে-পায়েও আঘাত রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, রবিবার (৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার পর দু‘পক্ষ কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করার সময় সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে কয়েকদফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। যে-কোনো প্রকার সংঘাত এড়ানোর জন্য নগর পুলিশ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। রাষ্ট্রীয় স¤পত্তি ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় হুমকি দেখা দেওয়ায় পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্যমতে, রবিবার সকাল ১০টার পর থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হলেও নিউমার্কেটের আশেপাশে ছিল না পুলিশ। তারা এসময় সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সরকারি সিটি কলেজের সামনে পটকা ফোটাতে থাকে। হঠাৎ করেই বেলা সাড়ে ১১টার পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ছোঁড়ে। সাথে সাথে শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট চত্ত্বর থেকে আশেপাশে ছোটাছুটি করতে থাকে।

তবে এর মিনিট দশেক পরেই শিক্ষার্থীরা আবারও নিউমার্কেট চত্বরে জড়ো হয় এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। তখন ফের পুলিশ টিয়ারশেল-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এসময় শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে যোগ দেয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরাও। এসময় কয়েক রাউন্ড গুলির আওয়াজও শোনা গেছে। এ সময় বহু শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট সড়ক ছেড়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে যায়।

এরপরেই সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা নিউমার্কেট চত্ত্বরে অবস্থান নেন। এরপরেই পুলিশ সেখান থেকে সরে যায়। বর্তমানে নিউমার্কেট, রাইফেল ক্লাব, স্টেশন রোড এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সংঘর্ষের পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আন্দোলনকারীদের একটি অংশ লালদিঘীতে জমায়েত হয়েছে। আরেক অংশ অবস্থান নিয়েছে টাইগারপাস-স্টেশন রোডে।

চমেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আলাউদ্দিন তালুকদার বলেন, নিউমার্কেট মোড়ে সংঘাত থেকে একের পর এক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় চএেশ হাসপাতালে আসছে। এ পর্যন্ত ৪৫ জনের মতো চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে। তবে তাদের নাম পরিচয় এখনই দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

 

আরও পড়ুন